'এরশাদকে স্বৈরাচার বললে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়'

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ছবি: সংগৃহীত

সংসদে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ছবি: সংগৃহীত

সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের বক্তৃতার সমালোচনা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, 'সরকারি দলের কয়েকজন বন্ধু এই সংসদে আমার নেতা সাবেক সফল রাষ্ট্রনায়ক, সফল সেনা প্রধান এইচএম এরশাদকে স্বৈরাচার বলে আখ্যায়িত করেন। যখন আমার নেতাকে স্বৈরাচার বলেন, তখন আমাদের শুধু আঘাত লাগে না। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। তাছাড়া সরকারি দলের কয়েকজন সদস্য সংসদে ও বাইরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে একটি দলের (বিএনপি) নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা করে জনগণের 'কর' এটা অপচয় করছেন।'

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বিজ্ঞাপন

জাপা এমপি বাবলা বলেন, 'আমাদের দলের চেয়ারম্যান বিরোধী দলীয় নেতা এইচ এম এরশাদও জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছেন। আমাদের নেতারাও বলে আসছেন জাতীয় ঐক্য ছাড়া দেশ এগোতে পারে না। সে কারণে আমাদের নেতা পুরো জাতীয় পার্টির পরিবার সব সময় আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। শুধু যে ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার সম্পর্ক তা কিন্তু নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সাম্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের বৃহত্তর স্বার্থে বঙ্গবন্ধু কন্যার আহ্বানে বার বার জাতীয় পার্টি সাড়া দিয়েছে।'

তিনি বলেন, '১৯৯৬ সালে আমাদের পার্টির সমর্থন নিয়ে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিল। ২০০৬ সালের আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে মঞ্চে আমার নেতার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে পল্টনের ময়দানে আশেপাশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সর্বস্তরের মানুষের কত অভিব্যক্তি হয়েছিল। সেটা পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে। সেদিন আমার নেতা দেশ ও দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে সকল প্রকার ভয়-ভীতি লোভ লালসা উপেক্ষা করে দীর্ঘপথ আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে রাষ্ট্র নায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমার নেতা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে নিজের বোনের মত সম্মান করেন। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাও আমার নেতাকে বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করেন। কিন্তু আমার নেতা যে কিনা আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার জন্য সব সময় জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাশে থাকেন। যিনি এই দেশের উন্নয়নের অন্যতম রূপকার। সাবেক সফল রাষ্ট্র নায়ক, সাবেক সফল সেনা প্রধান এবং বর্তমানে বিরোধী দলের নেতা এরশাদকে এই সংসদে দাঁড়িয়ে কোন কোন সরকারি দলের সদস্যা স্বৈরাচার বলে আখ্যায়িত করেন, তখন আমাদের হৃদয়ে শুধু আঘাত লাগে না, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। শুধু তাই নয় আমার নেতার নাম উচ্চারণের করার আগে কোন ধরণের সম্মান সূচক শব্দ প্রয়োগ করার ব্যাপারেও তারা কৃপণতা করেন। এটি আমার বন্ধুদের কাছে প্রত্যাশা করি না।'

সরকারি দলের সদস্যরা সংসদে বিএনপি’র নেতা ও বিএনপি নিয়ে সংসদে আলোচনা করে জনগণের কর এর টাকার অপচয় করছেন দাবি করে বলেন, 'আমরা প্রায়ই দেখি সংসদে যে কোনো বিষয়ের ওপর আলোচনার সময় সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক যেভাবেই হোক একেটি বিশেষ দলের নাম উচ্চারণ করেন এবং সেই দলের নেতা নেত্রীর নাম নিয়ে সংসদে আলোচনা সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। তারা এমন একটি দলের নেতার সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন যেই দলটিকে এই দেশের মানুষ বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই দলের নেতাদের প্রেস কনফারেন্স ছাড়া আর কোন কাজ নেই। সেই দল নিয়ে সংসদে আলোচনা করে জনগণের কর এর টাকার অপচয় করে। প্রথমত তাদের দলের প্রচারের কাজটি সরকারি দলের কয়েকজন সদস্য খুব ভালোভাবেই করে যাচ্ছেন। শুধু সংসদেই নয় সংসদের বাইরের বিভিন্ন সভা সমাবেশে বিশেষ দলটি নিয়ে এবং তাদের নেতাদের নিয়ে বক্তব্য রাখেন সরকারি দলের বন্ধুরা। যেই দলটি তাদের অতীতের কু-কর্মের জন্য মানুষ ভোট দিচ্ছে না। তাদের তথা কথিত আন্দোলনেও জনগণ সাড়া দেয় না। তারপরেও শধু তাদের নিয়ে এই সংসদে আলোচনা করে জনগণের কর এর টাকা অপচয় করার কোন মানে আছে বলে মনে করি না।'

সরকারের উন্নয়নকাজের প্রশংসা করে বিরোধী দলের এই সদস্য বলেন, 'সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়ন আজ বিশ্ব স্বীকৃত। তারমতো নেতা জেগে আছেন বলেই দেশের ১৭ কোটি মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন।'