ভাড়া বিমানে ১১শ কোটি টাকা লোকসান

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ বিমান বহরে গতি আনতে ৭৭৭-২০০ দুটি বিমান লিজ নেওয়া হয়েছিল। অসম চুক্তি অনুযায়ী দীর্ঘদিন সেই বিমানের পেছনে অযথা টাকা ঢালতে হয়েছে সরকারকে। চুক্তি অনুযায়ী বিমান চলুক আর না চলুক মাসিক ভাড়া পরিশোধ করার কথা ছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিতে হয়েছে বিমান বাংলাদেশকে। তবে আশার কথা সেই দায় দেনা থেকে গত মার্চ মাসে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে।

এই দুটি বিমান চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে বিমান দুটির পেছনে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থাৎ নীট লোকসান ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ অক্টোবর) সংসদ ভবনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

বিমান লীজ সংস্কৃতি থেকে একেবারে বেরিয়ে আসতে চায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। তাই এ বছর নতুন ৩টি ড্যাশ-৮ বিমান আসার কথা ছিল। তার মধ্যে দুটি এ বছরের মধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হবে আর একটি আসবে জানুয়ারিতে। এ বিমানগুলো ২৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছে।

কার্যপত্র অনুযায়ী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, সিভিল এভিয়েশনের সহযোগিতায় প্রতিদিন পৃথিবীর কোথাও না কোথাও কয়েকটা করে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। তাছাড়া লন্ডনে সপ্তাহে একটি করে কমার্শিয়াল ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, জুলাই মাসে বিমান ১৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। তার আগের মাসে অর্থাৎ জুন মাসে আয় হয়েছিল ১৬৯ কোটি টাকা। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় বিমান তার কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করেনি। তবে বেতন কিছুটা কাট ছাঁট করে সকল কর্মীকে ধরে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছর আগে কয়েকটি নতুন এয়ারক্রাফট কেনা হয়েছিল। এত কিছুর পরেও বিমান এ সময়ে সবগুলো কিস্তি পরিশোধ করেছে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সরকার ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল যার মধ্যে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

লীজ প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, বিমানের লীজ প্রক্রিয়াটা তার কাছে স্পষ্ট নয়। ক্রয় প্রক্রিয়ার সময় বিষয়টা নিয়ে কমিটিতে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল।

এছাড়া বৈঠকে আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল ২০২০, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২০২১ সালের বাজেট ব্যবহার এবং বৈশ্বিক করোনা মহামারি সম্পর্কে আলোচনা হয়। আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল-২০২০ এর প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে আগামী অধিবেশনে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে আধুনিক ও আরো যুগোপযোগী কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য কমিটি বৈঠকে সুপারিশ করে। করোনা মহামারী প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসচেতনতা বাড়াতে আরো জোরালো পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়াও বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।