পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের বসুন্ধরা শাখার একজন গ্রাহকের প্রায় ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২১ জানুয়ারি) ব্যাংকটির সাবেক এভিপি মোহাম্মদ শামছুল হাসান ভূঁইয়া, সাবেক-সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মাহবুব আহমদ এবং সাবেক ক্রেডিট ইনচার্জ মো কাওসার হোসেনের বিরুদ্ধে দুদক চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে।
২০১৭ সালে আজমীর ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী মোসাম্মৎ আফরোজা বেগম দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড) বসুন্ধরা শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন। ওই হিসাব খোলার পর তিনি সেই একাউন্টে কোন লেনদেন করেননি এবং কোন চেক বই গ্রহণের জন্য আবেদনও করেননি। কিন্তু গ্রাহককে না জানিয়ে আসামিরা বিভিন্ন সময়ে সেই অ্যাকাউন্টে অর্থের লেনদেন করেন এবং গ্রাহকের ছবি, কাগজপত্র ও স্বাক্ষর জাল করে গ্রাহকের নামে ৫০ পাতার একটি চেকবই ইস্যু করেন।
পরবর্তীতে আফরোজা বেগম ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণের আবেদন করলে আসামিরা সেই আবেদন পরিবর্তন করে আজমীর ইলেকট্রনিক্স নামে ভিন্ন একটি আবেদন হিসেবে তা সংরক্ষণ করেন। আবেদনকৃত এক কোটি টাকা ঋণের মধ্য থেকে ৮০ লাখ টাকা মঞ্জুর করা হলে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে জাল স্বাক্ষর দিয়ে এসব টাকা উত্তোলন করেন বলে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল বার্তা২৪.কম-এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম (২৫) আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার চাকলা বাজার এলাকায় নাহিদ হোসেন নামে এক যুবকের নেতৃত্বে প্রকাশ্য ১৫-২০ জন লোক তার ওপর হামলা চালায়। নাহিদ নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের গোলামের ছেলে ও তার সহযোগি পলাশ হরিপুর গ্রামের উকিল মিয়ার ছেলে ও এবং তার আরো সহযোগীদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
আহত অবস্থায় শহিদুলকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। আহত সাংবাদিক শহিদুল বার্তা২৪.কম এর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৬ অক্টোবর প্রথম দফা হামলার শিকার হয়ে নাহিদ সহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দিয়েছিলাম। এরপরই হামলাকারীরা আত্মগোপনে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিলো আত্মগোপনে থাকা নাহিদ বাহিনীর সদস্যরা। এরই জেরে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে চাকলা বাজারে চারিদিক থেকে আমাকে ঘেরাও করে নাহিদ ও তার সঙ্গে থাকা ক্যাডার বাহিনীর ১৫-২০ সদস্য। এরপরই পকেট থেকে ছুরিসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র বের করে আক্রমণ চালায় তারা। নাহিদ মূলত অন-লাইনে জুয়ার এজেন্ট দেয় ও অবৈধভাবে ডলার লেনদেন করে যুবসমাজকে ধ্বংস করছে প্রতিনিয়ত। নাহিদ সহ তার অন্যান্য বাহিনীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, গত ১৬ অক্টোবর প্রথম দফায় হামলার ঘটনাটি জানা মাত্রই তাৎক্ষণিক থানা পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে সাংবাদিক শহিদুলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিলো। এরপর থেকেই ঘটনাটি খতিয়ে দেখছিলো পুলিশ। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আবারো তিনি হামলার শিকার হয়েছেন বলে জেনেছি। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর দুপুরে পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর গ্রামে এক নব মুসলিম পরিবারকে অবরুদ্ধ রাখা সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে প্রথম দফায় হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। পরে হামলাকারীদের অপকর্ম তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এর জেরেই দ্বিতীয় দফায় তার ওপর আবারো সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম বলেছেন, আশাকরি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগ করবেন। অন্যথায় আমরা ফের আন্দোলনে নামবো।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোরব) রাত পৌনে ১২টার দিকে বঙ্গভবনের সামনে উপস্থিত হন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ কয়েকজন সমন্বয়ক। এরপর বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন দুই সমন্বয়ক।
বিক্ষোভকারীদে উদ্দেশ্যে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ষড়যন্ত্রকারী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু পরবর্তী রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত হওয়ার আগে যদি এই রাষ্ট্রকে রাষ্ট্রপতিহীন করে ফেলা হয় তাহলে বিদেশি শক্তিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আমরা তা হতে দেব না। তাই আগামী দুই দিন বুধবার ও বৃহস্পতিবার সবার সঙ্গে কথা বলে এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি করা হবে যাকে নিয়ে কোনো বির্তক থাকবে না। তারপর শাহাবুদ্দিনকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এ জন্য আমাদের দুই দিন সময় দিন।
তবে, সমন্বয়কদের বক্তব্যের পরেও বিক্ষোভকারীদের একাংশ চলে গেলেও অন্যরা বঙ্গভবনে সামনে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মেডিকেল টিম নিয়ে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান এক বার্তায় এই অনুরোধ জানান।
বার্তায় বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূসের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এটি একটি নৈমিত্তিক বিষয়। রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের চিকিৎসার জন্য এ ধরনের মেডিকেল টিম নিয়মিত গঠন করা হয়ে থাকে। এ নিয়ে কোনো ধরনের গুজব না ছড়ানোর জন্য সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেস্থেসিয়া অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইন্টেনশিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে ইন্টেনশিভ কেয়ার ইউনিটে আইসিইউ-২ এবং দুই নম্বর বেড সর্বক্ষণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি রাত্রিকালীন চিকিৎসার জন্য সাতজন চিকিৎসকের টিমকে আলাদা করে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সাত চিকিৎসকের মধ্যে তিনজন কার্ডিয়াক, অ্যানাস্থেসিয়ার ও সিনিয়র চিকিৎসক। এছাড়া আইসিসিইউ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককেও টিমে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এটি একটি রুটিন বিষয়। যে-কোনো রাষ্ট্র প্রধানের জন্যই বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে প্রতিটি বিভাগে এরকম টিম প্রস্তুত করা থাকে আগে থেকেই। এটি প্রধান উপদেষ্টার অসুস্থতাজনিত বা এরকম কিছুই নয়।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল আমিন বিপ্লবকে (৫৪) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪।
গ্রেফতার আবদুল্লাহ আল আমিন বিপ্লব গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। টানা দ্বিতীয় বারের মতো লংগাইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। গফরগাঁও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং দৈনিক সমকাল পত্রিকার গফরগাঁও উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর ময়মনসিংহ নগরের গাঙ্গিনাপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে কোতোয়ালী মডেল থানায় তাঁকে হস্তান্তর করে র্যাব।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪'র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গফরগাঁও উপজেলার থানায় দু'টি বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। ওই দু'টি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, গ্রেফতার আবদুল্লাহ আল আমিন বিপ্লবের বিরুদ্ধে থানায় দুটি বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। এক মামলায় তিনি প্রধান আসামী এবং অপর একটি মামলায় ২২ নম্বর আসামী।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আসামীকে আমাদের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) পাগলা থানা পুলিশ আমাদের কাছ থেকে আসামীকে আদালতে সোপর্দ করবে।