কুয়াশার চাদরে মোড়া খুলনা
খুলনার প্রকৃতি ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে। কয়েকদিন তীব্র শীতের পরিমাণ কম থাকলেও খুলনায় কুয়াশার মাত্রা হঠাৎই অনেকটা বেড়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোরে খুলনায় সূর্যোদয় হবার কথা ছিলো ৬টা ৪৫ মিনিটে। তবে তার ১ ঘণ্টা পরে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের পরেও সূর্যের আলো বা আভা কিছুই দেখা যায়নি। প্রকৃতির নিয়মে সূর্যোদয় হলেও ঘন কুয়াশায় সূর্য যেনো কাবু হয়ে পরেছে। ভোরে খুলনায় তাপমাত্রা ছিলো ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নগরী বিভিন্ন এলকা ঘুরে দেখা যায়, পিচঢালা সব পথে যেনো সাদা মেঘের ভেলা নেমেছে। কুয়াশায় ঢাকা পরে আবছা আলোয় ছেয়ে আছে সর্বত্র। বেশীরভাগ রোড ফাঁকা, দু'এক জন রাস্তায় বের হলেও শীতে জবুথবু অবস্থা তাদের। হেডলাইট জ্বালিয়ে গুটি কয়েক রিকশা আর গাড়ি চলাচল করছে। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা নেমে এসেছে ২০ গজের মধ্যে। কাছের সবকিছুও যেনো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। ঘন কুয়াশা আর হালকা উত্তরীয় বাতাসে ভোগান্তি বেড়েছে কর্মজীবীদের। কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করেও থেমে নেই কর্মজীবী মানুষ। কাজের খোঁজে বেরিয়ে পরেছেন রাস্তায়। একটু উষ্ণতার আশায় টি স্টলগুলোতে ভিড় দেখা গেছে।
মডার্ন ফার্নিচার মোড়ে রিকশাচালক ইকবাল মুন্সি বলেন, কুয়াশায় দুই হাত দূরের কিছুও দেখা যাইতেছে না। তাই রিকশার সামনে টর্চ লাইট লাগাইয়া চালাইতাছি, যাতে সামনে থিক্কা কিছু মাইরা না দেয়। আমরা তো আর ঘরে থাকতে পারিনা।
পূর্ববানিয়া খামার এলাকার একটি টি স্টলে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর রহমান বলেন, ফজরের নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাব, ঘর থেকে বের হতেই দেখি কুয়াশার আস্তরণ। প্রতিদিনই হালকা কুয়াশা থাকে, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কুয়াশা পড়েছে।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে সকালে খুলনা রেলস্টেশন থেকে সঠিক সময়ে ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। তাছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে দূরপাল্লার বাসগুলো ধীরে চলাচল করছে। খুলনার জেলখানা ও রূপসা ঘাটে সীমিত আকারে ট্রলারে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনায় পৌষের শেষে শীতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় রাত থেকে কুয়াশা বেড়েছে। তবে বেলা বাড়লে কুয়াশা কেটে যাবে। বর্তমানে খুলনার তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করেছে।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বার্তা২৪. কম কে বলেন, শীতে তাপমাত্রা কমে সোমবার দিনগত রাত থেকেই ঘন কুয়াশা শুরু হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কেটে যাবে। তখন সূর্যও দেখা যাবে। পৌষের শেষে শীতের দাপট কিছুটা কম হলেও মাঘের শুরু থেকে খুলনায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সম্ভাবনা আছে।