আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হককে একই মন্ত্রণালয়ে ১ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ভয়াল রূপ ধারণ করে স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চাঁদপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। নদীতে তীব্র ঢেউ ও বাতাস থাকায় চাঁদপুর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
এদিকে বৃহস্পতিবার ( ২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে ঢাকা-চাঁদপুর রুটে লঞ্চ চলাচল করলেও নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ-মতলব রুটের যাত্রাবাহী ছোট নৌ-যান চলাচল বন্ধ ছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে চাঁদপুর নদী বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে চাঁদপুরে সকাল থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও দুপুর একটার পর থেকে ভারী বর্ষণ ও তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌযান কর্মকর্তা বশির আলী জানান, সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব না থাকায় ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচল করে। তবে চাঁদপুর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করা ছোট নৌযান বন্ধ রাখা হয়। দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি বাতাস শুরু হলে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মো. শোয়েব জানান, চাঁদপুর উপকূলীয় এলাকার আওতায় থাকা হিসেবে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ইতিমধ্যে চাঁদপুরে দমকা হাওয়াসহ থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামীকাল বিকেল পর্যন্ত চলমান থাকবে। ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব কেটে গেলে আবহাওয়ার পরিস্থিতি আগের মত ঠিক হয়ে যাবে।
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই ঢাকা, রাজবাড়ি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে এটি আছড়ে পড়তে পারে এবং বর্তমানে ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এরইমধ্যে দানা’র প্রভাব দেখা দিতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
রাজবাড়ী জেলা করেসপন্ডেন্ট জানিয়েছে, সকাল থেকেই জেলায় প্রচণ্ড মেঘলা আকাশ বিরাজ করছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির প্রভাবে জনজীবন কিছুটা বিপর্যস্ত ঘটছে। নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে। সারাদিন বৃষ্টি হওয়াতে জনজীবনের পাশাপাশি প্রভাব পড়ছে কৃষিতেও। বৃষ্টির কারণে আগাম সবজি চাষীরা ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগ।
বালিয়াকান্দি কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এভাবে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি থাকলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশেষ করে যারা আগাম শীতকালীন ফুল কপির আবাদ করেছেন। ক্ষেতে পানি জমে গেলে ফুলকপির গোড়া পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে চাঁদপুরে নদীতে তীব্র ঢেউ ও ঘূর্ণিপাক বাতাস থাকায় জেলা থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে চাঁদপুর নদী বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া জেলায় সকাল থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও দুপুর একটার পর থেকে ভারী বর্ষণ ও তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়।
রাজধানীর সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী উঠানামাসহ বিভিন্ন কারনে সৃষ্ঠ দীর্ঘ দিনের যানজটে অতিষ্ঠ নগড়বাসী। ফলে যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’র সবগুলো ট্রাফিক বিভাগ।
গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৭৩১টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্তে ৬৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ১০৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৩টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাত-দিন কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। গতকাল বুধবার (২৩অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৭৩১ টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্তে ৬৫ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ১০৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৩টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এর আগে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নির্মিত নৌবাহিনীর জেটি ভেঙে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে জোয়ারের পানির তোড়ে একটি বার্জের ধাক্কায় জেটিটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। গতরাত ২-৩টার সময় ছিল পূর্ণ জোয়ার। এ সময় ঢেউয়ের প্রচণ্ডতায় জেটির সঙ্গে বাঁধা একটি ছোট বার্জের ধাক্কা লাগে; এতেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) জেটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন।
তিনি বলেন, জেটির সঙ্গে বেঁধে রাখা বার্জের রশি ছিঁড়ে গেলে বার্জের ধাক্কা লাগে। এই ধাক্কায় জেটির একটি অংশ ভেঙে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। জেটি যেহেতু নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাই নৌবাহিনী সিদ্ধান্ত নিবে এটি পরবর্তীতে কি করা হবে।
জেটি ঘাটের চা দোকানি আবদুল মাজেদ বলেন, বার্জটি জেটির সঙ্গে বেঁধে রাখায় মধ্যরাত থেকে বাতাসের ধাক্কায় বড় বড় আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এ সময় কেউ জেটিতে এবং বার্জে ছিল না। এমনকি, রাত ২-৩টার দিকে জেটি ভেঙে যাওয়ার পর সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো লোককে জেটির আশেপাশে দেখা যায়নি।
গত কয়েকদিন ধরে ছোট আকারের তিনটি নৌযান জেটিতে কাজ করছিল। এসব নৌযান সরিয়ে না রাখার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌমহড়া অনুষ্ঠানের জন্য জেটিটি নির্মাণ করেছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। দীর্ঘ সৈকত দ্বিখণ্ডিত করে জেটি নির্মাণ করার বিরুদ্ধে সে সময় আওয়াজ তুলেছিলেন পরিবেশবাদীরা।
এমনকি, ২০২২ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত রুল জারি করেছিলেন জেটিটি অপসারণের জন্য। ফোরাম সভাপতি আনম হেলাল উদ্দিন জানান, আদালতের রুল জারির পরেও জেটি অপসারণ করা হয়নি।
এদিকে, গত বছর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক জাহাজ আসা-যাওয়া করছিল উক্ত জেটি দিয়ে। এই জেটি দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি-সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাদেরও প্রথম ধাপে ফেরত পাঠানো হয়। আগামী ১ নভেম্বর থেকে জেটিটি দিয়ে দ্বীপে যাতায়াতের প্রস্তুতি নিচ্ছিল জাহাজ কোম্পানিগুলো।