বিকেলে বৃষ্টির সম্ভাবনা, থাকতে পারে আরও ৩ দিন
পৌষের শুরু থেকেই দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। মাঝে মাঝে মেঘকে সরিয়ে উঁকি দিলেও দীর্ঘ সময় ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় শীত বেশ দাপট দেখাচ্ছে। এসব জেলায় গত ১০ দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। এছাড়া ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়া ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কনকনে শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিরাও নাকাল হয়ে পড়ছে। দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। জীবিকার তাগিদে শীতের তীব্রতাকে উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষদের। ব্যবসায়ীদেরও চলছে মন্দা অবস্থা।
এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। থাকতে পারে আরও দু-তিনদিন। এ সময় সেসব এলাকায় তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসবে। বাড়তে পারে শীতের তীব্রতা।
আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পরে। আজ দুপুরের পর থেকে ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি কিংবা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ঢাকার দু-এক জায়গায়ও বৃষ্টি হতে পারে। থাকতে পারে আরও দু-তিনদিন। এসময় শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতের তীব্রতা থাকবে। ঘন কুয়াশাও পড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ সকাল ৯ টা ১৩ মিনিটে থেকে ঢাকা থেকে সূর্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে দুপুর ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত। ভারত ও দুবাইয়ের মতো বাংলাদেশ থেকেও সূর্য গ্রহণ দেখা যাচ্ছে। তবে মেঘলা আকাশ থাকায় খুব একটা দেখা সম্ভব হচ্ছে না।’
এদিকে, শীতের তীব্রতায় বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ঠান্ডা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বীজতলা ‘কোল্ড স্ট্রোকে’ বিনষ্টের দুশ্চিন্তা করছেন তারা। এছাড়া যারা আলু ও সরিষার আবাদ করেছেন তারাও চারা নষ্টের আশঙ্কা করছেন।
উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বলেন, অনেক আশা নিয়ে বরো ধানের বীজ রোপণ করেছেন তারা। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।