তিনজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা বলে ধারণা পুলিশের

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

বরিশালে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর গ্রামের সাবেক আলম মেম্বার বাড়ির কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের বাসা থেকে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তিনজনকেই শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের । কেননা প্র‌ত্যে‌কটি মর‌দে‌হের না‌কের কা‌ছে রক্ত দেখা গে‌ছে। এছাড়া শরী‌রে তেমন কোনো আঘা‌তের চিহ্ন দেখা যায়‌নি।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বার্তা২৪.কমকে মোবাইল ফোনে এমন মন্তব্য করেন বরিশালের পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ সাইফুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি কোনো ডাকাতির ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে জমিজমা বিরোধ বা পারিবারিক কোনো বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে, কীভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

নিহতরা হলেন- কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রব ও হাসান মাহমুদের মা মরিয়ম বেগম (৭০), খালাতো ভাই ভ্যানচালক ইউসুফ (২২) ও বোনের জামাই অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মোঃ শফিকুল আলম (৬০)।

নিহত ইউসুফ সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ধাঁড়ালিয়া গ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে এবং নিহত শফিকুল ইসলাম আলমের বাড়ি স্বরূপকাঠি উপজেলায়।

নিহত ম‌রিয়ম বেগ‌মের ছেলে হারুন অর রশীদ বার্তা২৪.কমকে জানান, শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রা‌ত সা‌ড়ে ৯টার দি‌কে ঘরে থাকা সাতজন খাবার খাওয়ার পর নাতনি আছিয়াকে নিয়ে ঘুমাতে যা তাঁর মা মরিয়ম। এরপর শ‌নিবার ভো‌রে ফজ‌রের নামা‌জ পড়ার জন্য ঘুম থেকে ও‌ঠে দাদিকে খাটে না পেয়ে অন্য রু‌মে ডাকতে যায় আছিয়া। পরে ওই রুমের দরজা খোলে দেখে বারান্দায় তাঁর মা পড়ে আছে। এরপর আছিয়ার চিৎকারে সবাই এসে মাকে ‘ডাকাডা‌কি করে কোনো সাড়া না পেয়ে মায়ের মৃত্যর বিষয়‌টি নি‌শ্চিত হই। প‌রে আরেক কক্ষে ঘুমাতে যাওয়া দুলাভাইকেও মৃত অবস্থায় দেখি। এর কিছুক্ষণ পর ঘরে থাকা খালাতো ভাইকে বাসার পিছনের একটি পুকুরের ঘাটলার ওপরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই। এরপর বাড়ির লোকজন থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, দুলাভাই শ‌ফিকুল ইসলাম আলম দুই দিন আ‌গে নিজ বা‌ড়ি স্বরূপকা‌ঠি থে‌কে তাদের বা‌ড়ি‌তে বেড়া‌তে আ‌সেন। আর ইউসুফ শুক্রবার রাতে ভ্যান চালানো শেষে তাদের বাড়িতে আসে।

তিনি আরও বলেন, বাসার ছা‌দের দরজা ছাড়া আর কিছু্ই খোলা পাওয়া যায়‌নি। ওই দিক দিয়েই খুনিরা বাসায় প্র‌বেশ ক‌রে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাইছে বলে ধারণা তার। ত‌বে এ ঘটনায় বাসার কোনো মালামাল খোয়া যায়‌নি।

বানারীপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বার্তা২৪.কমকে জানান, তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ তিনটি শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীসহ র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। তবে এঘটনায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেও জানান ওসি।