নারী নির্যাতন রোধে র‌্যালি, আলোচনা সভা

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নারী নির্যাতন রোধে র‌্যালি, ছবি: বার্তা২৪.কম

নারী নির্যাতন রোধে র‌্যালি, ছবি: বার্তা২৪.কম

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০১৯ উপলক্ষে ঢাকায় র‌্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা করেছে কয়েকটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রেসক্লাবে সিকিউরিং রাইটস ফর উইমেন ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স (এসআরডিডাব্লিউ) নামের নতুন একটি প্রকল্পের ব্যানারে ও অক্সফ্যাম বাংলাদেশের সমন্বয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (ক্যাম্পেই), নারী মৈত্রী, রেডঅরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স, আন্ডার প্রিভিলেজড চিলড্রেনস এডুকেশনাল প্রোগ্রামস (ইউসেপ বাংলাদেশ) ও হ্যালোটাস্ক লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও নারী গৃহকর্মীদের প্রতি সহিংসতা রোধে’ মানববন্ধন, র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং বিলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার।

বিজ্ঞাপন

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গৃহ শ্রমিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী আবুল হোসেন এবং নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহিন আক্তার ডলি।

পাঁচ বছরব্যাপী (২০১৯-২০২৪) এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৬,০০০ নারী গৃহকর্মীর সার্বিক কল্যাণ সাধনে কাজ করা করবে। এ প্রকল্পের অর্থায়নে আছে কানাডা সরকার ও অক্সফ্যাম কানাডা।

অনুষ্ঠানে শিরিন আক্তার বলেন, কনভেনশন ১৮৯ ও ১৯০ বাস্তবায়ন করতে হলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রতি বছর এ ১৬০০০ কর্মীকে নিয়ে সমন্বিত সমাবেশ করে ক্রমাগত দাবি তুলতে হবে, তাহলে দাবি আদায় সম্ভব হবে। নারী গৃহকর্মীরা আজ অনেক সচেতন, তবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আরো যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বাইরের দেশের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, মালিক ও শ্রমিক সম্মানের জায়গায় এক। কিন্তু আমাদের মানসিক কারণে আমাদের দেশে সেই সম্মান প্রতিষ্ঠা করা এখনো সম্ভব হচ্ছে না। নারী গৃহকর্মীর মর্যাদার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে একটি অফিস প্রতিষ্ঠা করে প্রতিটি নারী গৃহকর্মীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, যাতে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়। পাশাপাশি, এ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নীতিমালাকে আইনে রূপান্তর করতে হবে। জাতীয় সংসদে যত দ্রুত সম্ভব এ দাবি তুলে ৭১ বিধি ও পয়েন্ট অব অর্ডারের আওতায় জাতির সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে।

নারী নির্যাতন রোধে আলোচনা সভা, ছবি: বার্তা২৪.কম

তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে এ দাবিগুলোকে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার ওপরও গুরুত্ব দেন।

শাহিন আক্তার ডলি বলেন, নারী গৃহকর্মীর মর্যাদা ও সম্মানের জন্য আজ যে প্রতিবেদন ও দাবি তুলে ধরা হয়েছে, তা খুবই সুনির্দিষ্ট যা আগামীর পথ চলায় দিকনির্দেশনা দেবে। এ দাবি একটি সামাজিক আন্দোলন। যাতে সাতটি প্রতিষ্ঠান ও সরকারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আবুল হোসেন বলেন, ২০০২ সাল থেকে গৃহশ্রমের সম্মান ও মজুরির জন্য আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি তুলে আসছে জাতীয় গৃহ শ্রমিক নেটওয়ার্ক। কিন্তু সরকারের উদাসীনতার কারণে এখনো এ অন্দোলন চালিয়ে যেতে হচ্ছে। বর্তমান নীতিমালার প্রয়োগযোগ্য নীতিমালাগুলো সরকারকে অবশ্যই আইনে পরিণত করতে হবে এবং সরকারকেই গৃহকর্মের মজুরি নির্ধারণ করে দিতে হবে।

এ সময় আরো বক্তব্য দেন রেডঅরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্সের হেড অব প্রোগ্রাম নকিব রাজীব আহমেদ, ক্যাম্পেইর পরিচালক তপন কুমার দাস, হ্যালোটাস্কের চিফ অপারেশনস অফিসার মেহেদী স্মরণসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অক্সফ্যাম বাংলাদেশের প্রকল্প সমন্বয়কারী গীতা রানি অধিকারী বলেন, নিজের অধিকার নিজেই জেনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হতে হবে।

তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এসআরডিডাব্লিউ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশে নারী গৃহকর্মীদের সার্বিক কল্যাণ সাধন করা। এ উদ্দেশে প্রকল্পটি নারী গৃহকর্মীদের অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠায় সংগঠিত করে তাদের জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার প্রয়াস চালাবে।

পাশাপাশি, গৃহকর্মকে একটি প্রতিষ্ঠানিক কাজ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করে নীতি নির্ধারক, সরকার ও সমাজে গৃহকর্মের সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করে দিতেও প্রকল্পটি কাজ করবে।