পাখির বাসা ভাঙা যাবে না হাইকোর্টের রুল, উচ্ছ্বসিত পাখিপ্রেমীরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দবাউসা গ্রামের একটি আম বাগানের শামুকখোল পাখির বাসা না ভাঙতে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে ‘পাখির বাসা কখনোই ভাঙা যাবে না’ বলে রুল জারি করে এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, এনিয়ে ইজারাদার আতাউরের সঙ্গে স্থানীয় পাখিপ্রেমী রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন বৈঠকও করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাগান মালিক পাখিদের বাসা ছাড়তে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের পরে যেসব পাখি গাছে থাকবে, তাদের বাসা ভেঙে তাড়িয়ে দেবেন বলে ঘোষণা করেন।

বাঘার খোর্দ্দবাউসা গ্রামে আমবাগানে শামুকখোল পাখির বিচরণ

তবে তার এ ঘোষণার পর পাখিপ্রেমী স্থানীয় মানুষ বণ্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদফতরে যোগাযোগ করেও সাড়া পাননি। ফলে তারা নিরুপায় হয়ে পড়েন। পাখির বাচ্চাগুলো নিয়ে স্থানীয় সবাই শঙ্কা প্রকাশ করছিলেন।

এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর একটি জাতীয় দৈনিক এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়।

বুধবার ওই সংবাদটি হাইকোর্টের বিচারকদের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারুমিতা রায়। আদালতে তিনি প্রতিবেদনটি পড়ে শুনিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের আরজি জানান।

রুলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দবাউসা গ্রামকে কেন অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অভয়ারণ্য ঘোষণা করলে ওই আম বাগান ইজারাদারদের কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা ৪০ দিনের মধ্যে জানাতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাঘার বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখি

এদিকে, আদেশের খবর এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। পাখিপ্রেমী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদফতরের নম্বরে কল করে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছিলাম না। হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে যে আদেশ দিয়েছেন, তাতে পাখির বাচ্চাগুলো বেঁচে যাবে। যদি বাগানটিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা যায়, তবে পরিবেশের জন্য উপকার হবে।’

হাইকোর্টের আদেশ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগানের ইজারাদার আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি ৭ লাখ টাকা দিয়ে আম বাগান ইজারা নিয়েছি। পাখির বাসা এবং বাচ্চা থাকায় বাগানের পরিচর্যা করতে পারছি না। লোকসানের মুখে পড়েছি গত দুই বছর। যদি সরকারিভাবে আমাকে সহযোগিতা করা হয়, তবে আমি পাখি রক্ষায় কাজ করবো। আমার তখন কোনো আপত্তি থাকবে না। আমিও পাখি ভালোবাসি।’