রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক ওয়্যারহাউজে অবৈধ মাদকের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ওয়্যারহাউজটিতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে গুলশান-২-এর ১০৮ নম্বর রোডের ২৩ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত ওয়্যারহাউজটিতে অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, এটি অনিবন্ধিত একটি ওয়্যারহাউজ। এখান থেকে ঢাকার ক্যাসিনোগুলোতে অবৈধভাবে মদ সরবরাহ করা হতো। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
পটুয়াখালীর পায়রা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে যৌথ অভিযান চালিয়ে ইলিশ ধরার প্রায় ৫০ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি উপজেলা মৎস্য অফিস, পটুয়াখালী কোস্টগার্ড এবং মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে পায়রা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এই জালগুলো জব্দ করা হয়। এসময় নদীতে জাল রেখে পালিয়ে যায় অসাধু মাছ শিকারিরা।
সদর উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কার্যালয়। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পায়রা নদীতে ইলিশ ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে পটুয়াখালী ও মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে জালগুলো জব্দ করা হয়েছে। এসময় মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী স্থানে কোস্টগার্ডের সদস্যদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন স্থানীয় জেলেরা।
এবিষয়ে কোস্ট গার্ডের কন্টিজেন কমান্ডার বলেন, সাগর ও নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আমরা পায়রা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছিলাম। এসময় কাটাখালী পয়েন্টে গেলে স্থানীয় জেলেরা তীরে বসে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। জাল তোলার উদ্দেশ্যে কাছাকাছি গেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। তারা আমাদের দুইজন সৈনিককে টার্গেট করে। তখন তাদের বাঁচাতে প্রায় ফায়ার করার মতো অবস্থা তৈরি হয়।
সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ভরা পূর্ণিমার কারণে সাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মাইগ্রেশনের জন্য নদীতে প্রবেশ করেছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু জেলে নদীতে জাল ফেলেছিল। আমাদের উপস্থিত টের পেয়ে জেলেরা পালিয়ে যায়। তবে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে আমরা প্রায় ৫০ হাজার মিটার জাল জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। জালগুলো পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় পুরিয়ে ফেলা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আগরবাতি জ্বালানোর সময় তেলের দোকানে অগ্নিকাণ্ডে ৪ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধদের রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর ওয়াপদা ইউনিয়নের থানারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এসময় চারটি সিএনজি ও একটি মোটরসাইকেল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে মো. সজিব (৩৬), চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর গ্রামের আজীমের ছেলে মো. রিপন (৩২), সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চরবৈশাখী গ্রামের মৃত সোলেমানের ছেলে সালাউদ্দিন (৫০) ও আব্দুর শহীদের ছেলে মঈন উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেলুনের দোকানে সন্ধ্যা বাতি জ্বালানোর সময় পার্শ্ববর্তী অকটেনের দোকানের তেলের ড্রামে আগুন লেগে যায়। সেসময় দোকানে তেল দিতে আসা তেলবাহী গাড়ি ও তেল নিতে আসা চারটি সিএনজি ও একটি মোটরসাইকেলে আগুন লেগে যায়। ফলে ঘটনাস্থলে দোকানের কর্মচারী, সিএনজি ড্রাইভার ও তেলের গাড়ির হেলপারসহ চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়।
এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারপর সেখান থেকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়েছে।
চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, অগ্নিকাণ্ডে চারজন দগ্ধ হয়েছেন। তারপর দুইজনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়েছে। বাকিরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
ঘরের সামনে রাখা খাটিয়ায় চাদরে ঢাকা শাহিদা আক্তারের (১৩) মরদেহ। সেখানে বসে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করছেন স্বজনরা।
আর খাটিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে মোবাইলে শাহিদার ছবি দেখে অঝরে কাঁদছেন তার বাবা-মা। বিলাপ করে বলছেন আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও, আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও। পরিবারের লোকজন তাদের শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্ত কিছুতেই কান্না থামাতে পারছেন না তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে এমন দৃশ্যের দেখা মিলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের পশ্চিম দাপুনিয়া মহল্লায়। নিহত শাহিদা আক্তার ওই মহল্লার শহীদ মিয়ার মেয়ে।
গত বুধবার রাতে রাজধানী ঢাকার খিলগাওয়ের তিলপাড়া এলাকার নুরুল হায়দার রাকিবের বাসা থেকে শাহিদার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে শাহিদার মরদেহ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি গৌরীপুরের পশ্চিম দাপুনিয়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শাহিদার বাবা শহীদ মিয়া পেশায় রিকশাচালক। মা মাহফুজা বেগম গৃহিণী। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে শাহিদা সবার বড়। ছোট বোন মীম আক্তারের বয়স আট ও ছোট ভাই মেহেদি হাসান মারুফের বয়স দুই বছর।
২০২০ সালে ঢাকায় নূরুল হায়দার রাকিবের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় শাহিদা আক্তার। রাকিব গৌরীপুর পৌর শহরের সতীশা মহল্লার হাসমত আলীর মেয়ের জামাতা।
গত বুধবার রাতে রাকিবের বাসায় সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়নায় পেচানো ঝুলন্ত শাহিদাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শাহিদার বাবা শহীদ মিয়া বলেন, আমি গরিব রিকশাচালক মানুষ। ভিটেমাটি কিছু নেই। চার বছর আগে পাশ^বর্তী মহল্লার হাসমত আলী তার মেয়ের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজের জন্য আমার মেয়ে শাহিদাকে নিয়ে যায়। এখন সেই বাড়ি থেকেই মেয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। কেন আমার মেয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল আমি এর বিচার চাই।
শাহিদার মা মাহফুজা বেগম বলেন, গত রোযার ঈদের সময় মেয়ে বাড়ি ফিরে আর যেতে চাইছিল না। পরে হাসমত আলী বুঝিয়ে শোনিয়ে দুই মাসের কথা বলে কোরবানির ঈদের সময় শাহিদাকে ঢাকায় তার মেয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। গত সোমবার রাতে শাহিদার সাথে কথা হলে আমি বলি মা বাড়িতে এসে বেড়িয়ে যা। মেয়ে বলে এখন আসবো না কয়েকদিন পর একেবারেই চলে আসবো। কিন্তু এখন মেয়ে আসলো লাশ হয়ে। জীবিত মেয়েকে আর দেখা হলো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসমত আলী বলেন, আমার মেয়ে নাদিরা নাজনীন সেতু তার স্বামী রাকিবের সাথে ঢাকায় বসবাস করে। চার বছর ধরে শাহিদা ওদের সাথেই থাকতো। আমার মেয়ে শাহিদাকে বোনের মতো দেখতো। কিভাবে কি হল বলতে পারছি না। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবো।
ফকির লালন সম্রাট ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধক। তাঁর বাণী সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক ফকির লালন শাহ ও তাঁর গান। তিনি মানবধর্মে বিশ্বাস করতেন। বিশ্বজুড়ে মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। লালন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব। তিনি কেবল এই কুষ্টিয়ার নন, তিনি সারা বাংলাদেশের এবং সারা পৃথিবীর বাঙালির সম্পদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো লালনও আমাদের সম্পদ। তিনি তাঁর কর্মে ও প্রতিভায় বিশেষ কোনো ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন না। লালনের চেতনা অসাম্প্রদায়িক। এই চেতনা না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না। আজ অনেক উন্নতি-অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সমাজ যদি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী না হয়, তাহলে এসব অগ্রগতি টিকবে না।’
ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী। ১৩৪ বছর আগেই সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারে। আপনারা আমাদের ধরবেন। এই যে ছাত্র জনতার রক্তের ওপর আমরা যে সরকার গঠন করেছি। দায়িত্ব পেয়েছি। তা দায়সারা হতে পারে না বলেও জানান তিনি।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার,নকুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান,বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুবউদ্দিন, সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সমন্বয়ক আলমাস, সুইট প্রমুখ
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লালন একাডেমির খাদেম মহম্মদ আলী।
আলোচনা সভা শেষে বাউল ও লালন একাডেমির শিল্পীরা সেখানে লালনের গান পরিবেশন করেন।