উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ চরমে

  • স্টাফ করেসপন্ডেস্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তার  দু'পাশে খোঁড়াখুঁড়ি ও ফুটপাত ভেঙে ফেলায় জনদুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী

রাস্তার দু'পাশে খোঁড়াখুঁড়ি ও ফুটপাত ভেঙে ফেলায় জনদুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী

খুলনায় ড্রেন নির্মাণের জন্য কেডিএ এভিনিউয়ের রাস্তার দু'পাশে খোঁড়াখুঁড়ি ও ফুটপাত ভেঙে ফেলায় জনদুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। একদিকে ড্রেনের পুনর্নির্মাণ কাজ মন্থর গতিতে চলছে, অপরদিকে রোডের পার্শ্ববর্তী হাসপাতাল, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা নিত্য ঝুঁকিতে চলাচল করছেন। ড্রেন নির্মাণের জন্য মূল সড়কে যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

রাস্তা প্রায় অর্ধেক বন্ধ হয়ে গেছে

 

বিজ্ঞাপন

সূত্রে জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) ও বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিএমডিএফ) এর অর্থায়নে নগরীর কেডিএ এভিনিউ এবং আবু আহমেদ সড়কে রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাত পুনর্নির্মাণের জন্য জুলাই মাসের ২২ তারিখ থেকে পুরাতন ড্রেন ও ফুটপাত ভাঙার কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর ২ মাসেরও বেশি সময় পার হলেও নগরীর শিববাড়ী মোড় থেকে ময়লাপোতা পর্যন্ত নতুন ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে মন্থর গতিতে। পুরো রাস্তার ফুটপাত ভেঙে ফেলায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ভাঙা ফুটপাত ও ড্রেনের ওপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সিড়ি ব্যবহার করে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। কেডিএর রাস্তার পাশের সকল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়াও ড্রেন পুন:নির্মাণের জন্য সড়কের দু'পাশে খুড়ে ফেলায় রাস্তার অংশ ছোট হয়ে গেছে, ফলে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, কেডিএ এভিনিউয়ের রাস্তার দু'পাশে বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এখানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমাসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস এ সড়কের পাশে অবস্থিত। ২ মাসেরও বেশি সময় আগে রাস্তার পাশের সব ফুটপাত ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্কেভেটর দিয়ে ড্রেনের আশপাশের স্থাপনাও ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যত দ্রুত ভেঙে ফেলা হয়েছে তার বিপরীতে ড্রেন বা ফুটপাত নির্মাণ কাজে তেমন গতি নেই। কাজ চলছে খুবই ধীর গতিতে। বর্ষার মধ্যে কাজ শুরু করা এবং দু'মাস আগে ড্রেন ও ফুটপাত ভেঙে ফেলায় অফিস, হাসপাতাল, ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ। বৃষ্টি হলেই ড্রেনের কাদামাটি রাস্তায় চলে আসায় গাড়ি চলাচলের সমস্যা হচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে ব্যবসায়ীরা।

কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, মিউনিসিপ্যাল গভর্নেন্স এন্ড সার্ভিসেস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) প্রকল্পের আওতায় নগরীর ভেতরে ৪টি সড়ক সংস্কার ও ড্রেন পুনর্নির্মাণের জন্য ৩৫ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এমজিএসপি প্রকল্পের অধীনেই নগরীর কেডিএ এভিনিউ ও আবু আহমেদ সড়কের রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাত পুনর্নির্মাণ করার কাজ শুরু হয়েছে। এই প্যাকেজের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার ৮৯৫ টাকা। এই প্যাকেজের আওতায় নগরীর শিববাড়ি মোড় থেকে রয়েল মোড় পর্যন্ত ১ দশমিক ৮৬৬ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশের ড্রেন নতুন করে নির্মাণ এবং সড়কটি কার্পেটিং করার কথা রয়েছে। ড্রেনের নির্মাণ কাজ করছে মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গত ২৭ জুন ঠিকাদারকে প্রকল্প বুঝিয়ে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এ কাজের সময় ধরা হয়েছে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

সূত্রটি আরো জানায়, প্রকল্পের দরপত্রে নির্মাণ কাজে সাবধানতা অবলম্বন, রাস্তার পাশের ব্যক্তিগত স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সড়ক বন্ধ করে নির্মাণ কাজ না করার শর্ত ছিলো। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ শুরুর পর থেকে কোনো শর্তই মানা হচ্ছে না।

ঠিকাদাররা জানান, কাজ শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। বৃষ্টি কমে গেলে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে যাবে।

কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মশিউজ্জামান খান বলেন, শুনেছি বৃষ্টির জন্য কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।