র‌্যাব পরিচয়ে ২ ভাইকে অপহরণ, পৌর কাউন্সিলরসহ গ্রেফতার ৩

  • স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রেফতার কাউন্সিলরসহ তিন আসামি, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

গ্রেফতার কাউন্সিলরসহ তিন আসামি, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দুই ভাইকে অপহরণ করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত পৌর কাউন্সিলরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাঘা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন, তার সহযোগী আলী হোসেন ও চক্রের সদস্য বিকাশ ব্যবসায়ী মিনহাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার মশিদপুর গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাদশা আলমের দুই ছেলে আব্দুর রহিম (৩০) ও রুবেল হোসেন (২৫) রাজশাহী শহর থেকে নতুন একটি মোটরসাইকেল কিনে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা উপজেলার কলিকা গ্রাম সড়কঘাটে পৌঁছালে ওই গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে পলাশসহ (২৫) তিন যুবক র‌্যাব পরিচয়ে তাদের পথরোধ করে।

ওসি আরও জানান, ওই তিন যুবক রহিম ও রুবেলের দেহ তল্লাশি শুরু করে। পরে রুবেলের মোবাইলে অশ্লীল ছবি পাওয়া গেছে জানিয়ে তারা দুই ভাইকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা জরিমানা করার হুমকি দিতে থাকে। পরে তারা মোটরসাইকেল, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং দু'টি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয়।

তারা রহিম ও রুবেলকে পার্শ্ববর্তী মশিদপুর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে তিন যুবকের সঙ্গে যোগ দেয় আরও তিন যুবক। তারা হলেন- মশিদপুর গ্রামের তজিমুদ্দিনের ছেলে আলী হোসেন (২২), মোশারফ হোসেনের ছেলে সবুজ (৩০) ও সাজেদুল ইসলাম (২৩)। ওই ছয় যুবক রহিম ও রুবেলকে পৌর কাউন্সিলর মোশরফ হোসেনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগী রহিম ও রুবেলকে তাদের বাড়িতে ফোন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে বিকাশ করতে বলে। অন্যথায় তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী দুই ভাই তাদের বড় বোন মর্জিনা বেগমের কাছে ফোন করে টাকা চান। তার বোন নম্বর চাইলে মিনহাজুল ইসলাম নামে এক বিকাশ ব্যবসায়ীর নম্বর দেওয়া হয়। মর্জিনা বেগম থানায় গিয়ে ওসিকে ওই নম্বর দেন এবং তার দুই ভাই অপহরণ হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ নম্বর ট্র্যাকিং করে বিকাশ ব্যবসায়ী মিনহাজুলকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যে উপজেলার মশিদপুরে কাউন্সিলর মোশারফের বাড়ি থেকে অপহৃত দুই ভাই রহিম ও রুবেলকে উদ্ধার করে। এসময় তাদের মোটরসাইকেল, মোবাইল ও নগদ টাকাও উদ্ধার করা হয়। কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে অন্যরা পালিয়ে যায়।

ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীদের বড় বোন মর্জিনা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে ওই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তা মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।