মানুষের জীবনের কথাই তো বলে বই। আর সেই বই যদি হয়ে ওঠে জীবন্ত, তবে কতই না মজার ব্যাপার ঘটে। এমনি এক ভাবনায় খুলনায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে হিউম্যান লাইব্রেরি।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে হিউম্যান লাইব্রেরির সদস্যরা উপস্থিত হয়েছিলেন খুলনার কফিতা'য়। বিশ্বের ৯০টি দেশের মানুষদের নিয়ে হিউম্যান লাইব্রেরিতে গল্প করেন সদস্যরা। সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সফল ৪ জন ব্যক্তি এ জীবন্ত বইয়ে তাদের গল্প তুলে ধরেন। ফাইরুজ ফাইজা বিথার, আকিব মুজিব, পাখি দত্ত, আর এস সৌমিক নামের সফল ব্যক্তিরা জীবন্ত এ মানব বইয়ের গল্প শোনান। খুলনা শহরে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হওয়া এই ব্যতিক্রমী লাইব্রেরি সবার জন্যে উন্মুক্ত ছিল।
আয়োজকরা জানান, হিউম্যান লাইব্রেরিতে কথা বলায় কোনো বারণ নেই। নেই চুপ থাকার মতো কোনো কঠোর নিষেধাজ্ঞা। প্রতিটি মানুষই এখানে এক একটা বই। ওরা গল্প বলে, নিজেদের গল্প। পাঠককে নিজেদের সুখ-দুঃখের অনুভূতির ভাগীদার করে। পাঠক বিমর্ষ হয়, কখনো আনন্দ তাদের ছুঁয়ে যায়, আবার কখনো নিজের ব্যাপারে উৎসাহী হয় নিজের হতাশা ভুলে। হিউম্যান লাইব্রেরির একটি অন্যতম শ্লোগান হল 'বইকে এর মলাট দিয়ে বিচার করো না/ডোন্ট জাজ এ বুক বাই ইটস কভার'।
পুরো হিউম্যান লাইব্রেরির ভিত্তিই দাঁড়িয়ে আছে এই নন-জাজমেন্টাল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবার চিন্তা নিয়ে। মানুষ তার আশেপাশের বৈচিত্র্যময় জীবন সম্পর্কে জানে না বলেই তার নিজস্ব গণ্ডির মাঝে কিছু বদ্ধমূল ধারনা দিয়ে আশেপাশের মানুষদের বিচার করার চেষ্টা করে। যা তার দৃষ্টিভঙ্গিকে অত্যন্ত নিন্মস্তরে নিয়ে যায়। হিউম্যান লাইব্রেরি মূলত মানব দৃষ্টিভঙ্গি উন্নয়ন, পরিবর্তন এবং অন্যকে সঠিকভাবে বিচার করতে শেখায়।
হিউম্যান লাইব্রেরির অন্যতম আয়োজক শাদমান ইকতেদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'খুলনায় প্রথমবারের মতো মানব বইয়ের গল্পের ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন শুরু করা হয়েছে। প্রথম দিনে জীবন্ত বইয়ের মতো জীবনের গল্প বলেছেন হিউম্যান লাইব্রেরির সদস্যরা। অদ্ভুত তাদের গল্প। নিজের ব্যক্তিগত জীবনে শত বাধা পার হয়ে সফল হবার ঘটনা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন একজন 'মানব-বই'। দারিদ্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জয়ী হবার গল্প শুনিয়েছিলেন একজন। অন্য 'বই' শুনিয়েছেন তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয়ের গল্প। আরেকজন 'বই' তার লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে সমাজের দ্বিধা পার হওয়ার যাত্রার গল্প বলেছিলেন। গল্পের মায়াজালে আটকে মুগ্ধ পাঠকগণ শ্রোতা হিসেবে শুনে গিয়েছিলেন তাদের গল্প। পাঠক আর মানুষরূপী বইদের এ আসর যখন শেষ হয়, তখন রাত গভীরে নেমে আসে। গল্পে বুঁদ হয়ে থাকা পাঠক ঘোরের মাঝে ঘরে ফিরেছে। নিয়ে গিয়েছে একরাশ অভিজ্ঞতা, যা হয়তো তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করবে, সুস্থ এ পৃথিবীতে সুস্থ চিন্তা করতে শেখাবে।
'হিউম্যান লাইব্রেরি বাংলাদেশ' এর তত্ত্বাবধানে এ আয়োজনটিতে আরও ছিলেন মুমতাহিনা, সুপ্তি, সুহা, জান্নাত, আকাশ এবং সায়েদ। জীবন্ত বইয়ের গল্পে মেতে থেকে পাঠকরা কাটিয়েছেন একটি সুন্দর সন্ধ্যা।
জাতীয় পার্টি একমাত্র দল যারা কোনদিন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হাট দখল, জমি দখল, অবৈধ ব্যবসা, লুটপাটের সাথে কখনো জড়িত ছিল না। বরং বিএনপির আমলে আমরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছি, আর আওয়ামী লীগের আমলে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। ষড়যন্ত্র মানে দল ভাগ করে দেওয়া, ক্ষমতা অন্যত্র চলে যাওয়া। আওয়ামী লীগ বড় ধরনের দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল সাংবাদিকদের সাথে এমন মন্তব্য করেছেন জাপার চেয়ারম্যান জি. এম কাদের।
শনিবার ( ১২ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর নগরীর দর্শনায় পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাপার চেয়ারম্যান জি. এম কাদের।
বক্তব্যে জাপা চেয়ারম্যান জি. এম কাদের বলেন,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংলাপে জাতীয় পার্টিকে না ডাকার পেছনে আওয়ামী লীগের তিনটি নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার অযুহাত সঠিক নয়। আমার কাছে এটি খুবই অদ্ভুত মনে হয়েছে। জাতীয় পার্টির বিষয়ে যে মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে এটা আমাদের সাথে অন্যায়। আমাদের জন্য বিব্রতকর। অন্তবর্তী কালীন সরকারকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে তিনি বলেন, সরকার ভগ্ন স্তূপের মাঝে দায়িত্ব নিয়েছে। এখন পর্যন্ত মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। প্রশাসন নড়বড়ে, অর্থনীতি নাজুক, আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। তবে তাদের দোষারোপ করা যাবে না। মানুষের পাহাড় সমান প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। একদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, অপরদিকে বাড়ছে বেকারত্ব। কারখানগুলো চালানো যেমন কষ্ট হয়ে পরেছে, উপার্জনও কমে গেছে। সরকারের সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে , নিরাপত্তা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বেকারত্ব দূর করা।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে চাঁদপুরে র্যালী ও সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে শহরের তিন নদীর মোহনা মোলহেডে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর এই সভার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
তিনি বক্তব্য বলেন, নিজের বাড়ীতে নিজে যদি নিরাপদ থাকি তাহলে ইলিশের বাড়িতে ইলিশ কেন নিরাপদে থাকবে না। আমাদের দেখাতে হবে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ইলিশ নিরাপদ। আইনের প্রয়োগ করতে আমরা চাচ্ছি না। আমরা চাই নিজের সম্পদকে নিজেরা রক্ষা করবেন। ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় সম্পদ। নিজের সম্পদকে কেন ধ্বংস করবেন। ইলিশ যেহেতু রাষ্ট্রের সম্পদ, আপনার স্বার্থ থাকবে রাষ্ট্রের জন্যে। দেশের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।
জেলা প্রশাসক বলেন, ভুল করলে মাফ পাওয়া যায়, কিন্তু অপরাধ করলে মাফ পাওয়া যাবে না। ২২দিন নদীতে মাছ ধরলে তা অপরাধ হবে। চাঁদপুরের সবগুলো বরফ কল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নদীতে যাত্রী পারাপার ছাড়া কোন স্পীডবোট চলবে না। চুরি করে যে মাছ বাজারে বিক্রি করবেন, সে বাজারগুলোতে আমরা মনিটরিং করবো। আমরা মা ইলিশ সংরক্ষণে বেশ ক’টি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। ২২ দিন নদীতে কোন ইলিশ ধরা যাবে না। নদীতে কোন মাছ ধরার নৌকাও যাবে না। সম্মিলিতভাবে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি মাছ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, চাঁদপুরে ইলিশের দাম কমাতে হবে। সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসতে হবে। ইলিশ মাছ উৎপাদনে কারো কোন বিনিয়োগ করতে হয় না, তাহলে কেন ইলিশের দাম বাড়বে। আপনাদের লোভ কমাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোঃ মোশফিকুর রহমান, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আমিরুল ইসলাম, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার সাব লেফটেন্যান্ট এম ফজলুল হক, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত।
সভায় জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, জেলা মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সকল অংশীজনদের নিয়ে মেঘনা মোহনা থেকে একটি বর্ণাঢ্য নৌ র্যালী বের হয়ে অভয়াশ্রম এলাকা ঘুরে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেছেন, আমাদের সবার পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশী। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু তত্ব না আসার জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন করেছিলন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটাকে মেনে না নিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারাই এদেশে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করেছে। গত ১৫ বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আওয়ামী লীগ নির্যাতন করেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দক্ষিন বাকলিয়া ওয়ার্ডের চর চাক্তাই সিাট কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সনাতনী কল্যান পরিষদ আয়োজিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শন, সনাতন ধর্মালম্বদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়, ও আর্থিক সহায়তা প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিএনপি সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করেছে। যেখানে ধর্মে ধর্মে কোনো বিভেদ ও ঘৃণার কোনো রাজনীতি থাকবে না। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা যেভাবে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে ছিল ঠিক একইভাবে দুর্গাপূজায়ও মণ্ডপে মণ্ডপে পাশে রয়েছে।
ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার খবরে পটুয়াখালীর বিভিন্ন বাজারে ইলিশ কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে শুরু হবে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগেই অনেকেই বাড়িতে ইলিশ মজুত করতে বাজারে ছুটে আসছেন, ফলে বাজারগুলোতে দেখা যাচ্ছে উপচে পড়া ভিড়।
বিক্রেতারা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশের সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে ক্রেতারা আগেভাগেই মাছ কিনে রাখছেন। এ কারণে ইলিশের চাহিদা এবং বিক্রি দুটোই বেড়েছে।
এক ক্রেতা বলেন, "আগামী কয়েক সপ্তাহ ইলিশ পাওয়া যাবে না, তাই এখনই কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করছি।"
বাজারে ইলিশের সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক থাকলেও নিষেধাজ্ঞার খবরে দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ের মধ্য দিয়ে ইলিশের প্রজনন নিরাপদ হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।