দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার তৈরি করছে কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার উৎপাদন করছে ‘কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস’। মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর ২৬ শতক জমিতে গড়ে উঠেছে চিলার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।

ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থানগত ছাড়পত্র, ফায়ার লাইসেন্স, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃক সেইফটি অডিট সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল ইনডিপেন্ট সেফটি অডিটর (ইউএনডিপি) এর অডিটের মাধ্যমে কমিশনিং ও সেইফটি সার্টিফিকেট পায়। সরজমিনে কারখানা পরিদর্শনের মাধ্যমে ‘বিএসটিআই’ চিলার উৎপাদনের ছাড়পত্রও পায় প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘আরএসি’ টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিবেশ সম্মত কাজের দক্ষতা বাড়াতে ‘গুড প্যাটটিস সার্ভিসেস’ প্রগামের মাস্টার ট্রেইনার হিসাবে কাজ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী প্রায় ১২ হাজার টেকনিশিয়ানকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে জানান। এছাড়া, ‘গিজ’এর আওতায় ন্যাচারাল রেফ্রিজারেন্ট আর-২৯০ ব্যবহারে টেকনিশিয়ানদেরও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের উৎপাদিত চিলারগুলো শতভাগ পরিবেশসম্মত দাবি করে আসাদুজ্জামান বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের আধুনিক কারখানা নির্মাণে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। একইসাথে ইউএনডিপ ‘র প্রোজেক্ট শর্ত মোতাবেক পাঁচটি মাইলস্টোন এর মাধ্যমে আনুমানিক ৫৯ লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যা এখনও চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানের পর গেল নয় আগস্ট রাতে একদল দুষ্কৃতকারী কারখানার প্রধান ফটক ভাঙচুর করে উৎপাদনের ব্যবহৃত কন্ডেন্সার, কম্প্রেসর, কপার টিউব, রেফ্রিজারেন্ট সিলিন্ডারসহ যাবতীয় কাঁচামাল ও উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ লুট করে বলে জানা যায়।

কারখানার প্রহরী জানান, ঘটনার দিন রাতে একদল দুষ্কৃতকারী আচমকা হামলা ও ভাঙচুর করে সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ হঠাৎ হামলা হওয়াতে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।

আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন নাম্বার থেকে টেলিফোনে হুমকি প্রদান করে আমাকে। যার প্রেক্ষিতে বেশ কিছুদিন স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ রাখা হয়।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের উৎপাদন চলমান রাখার লক্ষ্য নতুনভাবে মেশিনারিজ সংগ্রহ করে কাজ চালু করা হয়েছে। যা দেশীয় শিল্প বিকাশে প্রশংসার দাবি রাখে।

মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি ১৯৯৪ সাল থেকে সুনামের সাথে বাংলাদেশে রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং সেক্টরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। ব্যবসায়িক জীবনের শুরুতেই রিফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং মেশিন সার্ভিসের সংঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারিতে কাজ করার সুবাদে দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার প্রস্তুত করার সক্ষমতা অর্জন করি।

তিনি বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের স্বত্বাধিকারী হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা মেনে রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস আমদানি করি। যে তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে রক্ষিত রয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান রিফ্রিজারেন্ট খুচরা বিক্রির প্রতিষ্ঠান নয়।

দেশীয় প্রযুক্তিতে চিলার উৎপাদন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বুয়েট অধ্যাপক ড. মো. আলী আহম্মদ শওকত চৌধুরি বলেন, কুলিং পয়েন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস যে চিলার উৎপাদন করছে তার গুণগত মান ঠিক আছে। এটি উৎপাদন খুব জটিল প্রক্রিয়া না। তারা নমুনা যেগুলো উৎপাদন করেছিলো, আমরা যা দেখেছি তাতে কোন সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়নি। উৎপাদনের জন্য যে মেশিনারিজ প্রয়োজন তার একটি তালিকা এবং কারখানার ফায়ার এক্সিস্ট রিকয়েরমেন্ট দিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, সকল মেশিনারিজ স্থাপনের পর দেশে পরিবর্তিত অবস্থাতে সেখানে লুট হয়। এতে তার কারখানার একটা বড় ক্ষতি হয় বলে জানতে পারি।