খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না
দ্য লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে লিভারের ওপর যাতে চাপ না পড়ে সেজন্য তাকে হিউম্যান সিরাম অ্যালবুমিন দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে এক চিকিৎসক একথা জানান।
খালেদা জিয়ার শরীরে নতুন যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা অনেকটা কেটেছে জানিয়ে তিনি বলেন, বলা যায়, পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। তার শারীরিক এই অবস্থায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। এটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, স্থাস্থ্যের অনেক দিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল থাকলেও অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। বয়সও বড় ফ্যাক্টর।
ওই চিকিৎসক বলেন, লিভার প্রতিস্থাপনের বিকল্প হিসেবে হিউম্যান সিরাম অ্যালবুমিন দেওয়া হবে। এটি মানুষের রক্তের প্লাজমায় সর্বাধিক প্রোটিন গঠন করে। এটি দেওয়ার পর লিভারের ওপর চাপ পড়বে না। মেডিকেল বোর্ড নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। রিপোর্ট অনুয়ায়ী চিকিৎসায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শারীরিক সক্ষমতা যখন ভালো ছিল, তখন বিদেশে নেওয়া গেলে একটা সুযোগ থাকত। অর্থাৎ এভারকেয়ার হাসপাতালে যখন চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন মেডিকেল বোর্ড বারবার তাগাদা দিয়েছিল উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ পাঠাতে। সেটি সম্ভব হয়নি।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, আমেরিকার জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, লন্ডন ও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত সকল পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছেন। আরও দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ওনাকে দেখবেন।
তিনি তখন জানান, ম্যাডামকে এখন ওষুধ দিয়ে লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, প্রেশার, আর্থরাইটিস ও হার্টের জন্য চিকিৎসা করা হচ্ছে। ওষুধের বাইরে বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আর কীভাবে একই ছাদের নিচে ওনার শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা দেওয়া যায়- সেটি করার ওনারা উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তার আগে মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন এক্সটেন্ডেড মেম্বার আছেন, তারাও মতামত দেবেন। সে অনুযায়ী ওনার চিকিৎসা চলবে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বাড়ে। এর মধ্যে কয়েকবার তিনি জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও পড়েন, ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকতে হয়েছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।