পঞ্চগড়ে শীতের দাপটে অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষরা
হিমালয়ের কন্যা নামে খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে কনকনে শীতের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা। মধ্যরাত থেকে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে হিমেল হাওয়া। পড়েছে শিশির বিন্দু। ঘন কুয়াশার কারণে মাঠ ঘাট, পথঘাট সব ঢাকা পড়েছে। বেলা বেড়েছে তবুও দেখা নেই সূর্যের।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার পারদ বাড়লেও কমেনি শীতের তীব্রতা।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মধ্যরাত থেকে এ জেলা কুয়াশায় আচ্ছাদিত হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাফেরা করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। একদিকে কনকনে শীত অন্যদিকে হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু মানুষই নয় এই শীতের প্রভাব পড়েছে কৃষি ও প্রাণিজগতেও৷
এ বিষয়ে কথা হয় জেলা সদরের বাসিন্দা দুলাল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, কনকনে শীতের কারণে আমার শিশু সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে আমি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে আমাদের।
অন্যদিকে মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে আসে পাথর শ্রমিক সামিউল ইসলাম বলেন, মানুষ শীতেই বাড়ি থেকে বের হয় না। আর আমরা যারা পাথর শ্রমিক রয়েছি এ কারণে আমরা বরফ গলা নদীতে নেমেছি পাথর উত্তোলন করার জন্য। এই শীতের কারণে আমরা তেমন কাজকর্ম করতে পারছি না। আমাদের আয় কমে গেছে। কেউ আমাদের খোঁজ খবর নেয় না।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, আজ সকাল ৯টায় তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালকে এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বয়ে গেছে। গতকালকের তুলনায় তাপমাত্রা বেড়ে ১০ ডিগ্রি করে উঠেছে তাই তার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, যেহেতু প্রতিবছর এখানে শীত আগেভাগে শুরু হয় তাই পঞ্চগড়ে এবারও শীতের প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি। যারা প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষ তাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ও আবেদন করেছি শীতবস্ত্রের জন্য আবারও। আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি শীতার্ত মানুষ যেন শীত বস্ত্র পান এবার।