নেত্রকোনায় সরিষার আবাদ বেড়েছে আড়াইগুণ

  • মির্জা হৃদয় সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

নেত্রকোনায় মাঠজুড়ে হলুদ আর হলুদ। গত তিন বছরে নেত্রকোনার ১০ উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ। ফলন ভালো হওয়ায় বেড়েছে সরিষার আবাদ। কৃষকরা আমন এবং ইরি ধান আবাদের মাঝের সময়ে সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, নেত্রকোনার ১০টি উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে জেলার সদর উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর, পূর্বধলা উপজেলায় ২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর, দুর্গাপুর উপজেলায় ৬০০ হেক্টর, কলমাকান্দা উপজেলায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর, মোহনগঞ্জ উপজেলায় ৫৩২ হেক্টর, বারহাট্টা উপজেলায় ৬৭৫ হেক্টর, কেন্দুয়া উপজেলায় ১ হাজার ৪৭৮, আটপাড়া উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর, মদন উপজেলায় ২ হাজার ১০ হেক্টর এবং খালিয়াজুরী উপজেলায় ৩৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, এবার ১৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যদিও কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৩ হাজার ৫১ হেক্টর। তিনদফা বন্যার ফলে শেষের বন্যাতে ধানের ফলন দেরিতে হওয়ায় সরিষার জন্য উপযুক্ত হয়নি জমি। ফলে ১০০ হেক্টর কম আবাদ হয়েছে। 


তিনি আরও জানান, গত বছর ২০২৩ এ আবাদ হয়েছিলো ১০ হাজার ৮৮০ হেক্টর। যার উৎপাদন হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭২ মেট্রিক টন। ২০২২ এ ৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর যার উৎপাদন হয়েছিলো ৯ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন। ২০২১ সালে ৫ হাজার ২৫০ হেক্টরে উৎপাদন হয়েছিলো ৬ হাজার ৮২৬ মেট্রিক টন এবং তারও আগে ২০২০ সালে ৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। উৎপাদন ছিলো ৬ হাজার ৬১৩ মেট্রিক টন। আবাদ এবং উৎপাদন বাড়ায় কৃষকরা দুটি ধানের ফসলের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদের দিকে ঝুকঁছে। কমে আসছে পতিত জমির পরিমাণ। ধানের পাশাপাশি প্রায় লাখো কৃষক এই সরিষা আবাদে আগ্রহী হয়েছেন বলেও জানায় কৃষি অধিদফতর। 

বিজ্ঞাপন

নেত্রকোনা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আমন আবাদের পর কিছুদিন জমিটা পতিত পড়ে থাকে। সরিষা আবাদের ফলে জমিও কাজে লাগছে পাশাপাশি নিজেদের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটছে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে।

একই গ্রামের উদ্ভিদবিজ্ঞানের কলেজ শিক্ষক নাজমুল কবীর সরকার বার্তা২৪.কমকে জানান, চাকরি করলেও আমরা মূলত কৃষক। আমার বাবাও কৃষি কাজ করেছেন আমিও কৃষি কাজ করি। তিনি বলেন, সরিষা এমন এক ফসল যা শুধু ফেলে রাখলেই গাছ হয়। একদম কম খরচে ভালো ফলন যাকে বলে। যার জন্য অতিরিক্ত কিছু করা লাগে না। আমরা বিভিন্ন সভা সেমিনারে বলার চেষ্টা করছি সরিষা খুব সহজের একটি শস্য।

গত কয়েক বছরে সরিষার আবাদ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কৃষি অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন বছর মেয়াদি সরিষার আবাদ বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। বিদেশী তেলের ওপর আমদানি ৪০ ভাগ নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী গ্রহণের পাশাপাশি প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। এতে কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয় এবং ফলনও বাম্পার হয়েছে।