পঞ্চগড়ে নুসাইবা এক্সপ্রেস নামে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় হোসনে আরা মালা (৪২) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শহরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে পঞ্চগড়-তেতুঁলিয়া মহাসড়কে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে।
এঘটনায় আহত ১৪ জনকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত পাঁচ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলেও নয় জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে যান।
এদিকে, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে সদর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহের সুরতহাল করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
নিহত মালার বাড়ি পঞ্চগড় পৌরসভার ধাক্কামারা এলাকায়। তিনি ওই এলাকার শামসুজ্জোহা তরুণের স্ত্রী। মালা বেসরকারী এনজিও আশা’তে মাঠকর্মী হিসেবে চাকুরী করতেন। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে মো. সুমন ইসলাম (২২) নামে বাস চালকের সহকারীকে স্থানীয় জনতা পুলিশে সোপর্দ করেছে। তার বাড়ি জেলা শহরের রামের ডাংগা এলাকায়।
আহতরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া এলাকার নুর ইসলাম (৩৮), তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের খাটিয়াগছ এলাকার আদিব (২৫), পঞ্চগড় পৌরসভার নতুনবস্তি এলাকার ফিরোজা বেগম (৩৮), সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের দোমনি সরকার পাড়া এলাকার রমিনা বেগম (৬০) ও মুজিবর রহমান (৬৯), বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মাগুড়া পাড়া এলাকার আফজাল হোসেন (৩৫)।
তবে আহত জনি (২৪), ইমন (১৫), মারুফ (১৬), শামিম (১৬), শ্যামলি (৩৫), আজাহারুল ইসলাম (৪৫), আজিজার রহমান (৪৬), ভান্ডি (৪৫) এর ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, তেতুঁলিয়া থেকে ছেড়ে আসা নুসাইবা এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জেলা শহরের মিঠাপুকুর এলাকা বেশ কয়েকটি ইজিবাইককে ধাক্কা দেয়। পরে জেলা শহরের প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় বাসটি।
এসময় মোটরসাইকেলে থাকা হোসনে আরা মালা ছিটকে মহাসড়কে পড়ে যান। এতে বাসের চাপায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এদিকে ঘটনার পরপরই ঘাতক বাসটি ফেলে চালক পালিয়ে গেছেন। পরে বাসটি জব্দ করে জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহত মালার সাথে মোটরসাইকেলে থাকা সহকর্মী আহত নুর ইসলাম বলেন, অফিসের কাজ শেষে করে জেলা শহরের মেডিসিন রোডে যাচ্ছিলাম। আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম আর মালা আপা আমার গাড়ির পেছনে বসে ছিল। আমরা শহরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে পৌঁছলে পেছন থেকে বাসটি আমাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মালা আপা ও আমি সড়কের দুইদিকে ছিটকে পড়ি। এসময় গাড়ির চাকা তার শরীরের উপর দিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। তার এই মৃত্যু আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।
সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এস এম সোহরাওয়ার্দী বাসের চাপায় এক নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাসের হেলপারকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।