উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডায় জেঁকে বসেছে শীত। গত দুদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। কুয়াশার কারণে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তথ্য জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগের সংখ্যা। শীতবস্ত্রের অভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
কালীগঞ্জের কাকিনা চাপারতল এলাকার দিনমজুর কবির হোসেন বলেন, খুব ঠান্ডা। বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।
হাতীবান্ধার ভ্যানচালক এনামুল হোসেন বলেন, এই ঠান্ডায় কোন লোকজন নেই তাই ভ্যান নিয়ে বসে আছি। পরিবার চালানো অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সিন্দুর্না ইউনিয়নের তিস্তার চরের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, এই ঠান্ডায় কাজকাম করা যায় না। হাত গুটিয়ে আসে। খুবই কষ্টের মধ্যে আছি আমরা।
পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের ভ্যান চালক মোকলেছুর রহমান জানায়, কষ্ট হলেও নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ অনেক বেশি ঠান্ডা পড়েছে। এত বেশি ঠান্ডায় অনেকেই ভ্যানে চড়তে চায় না। তবুও বের হয়েছি। পরিবার বাঁচানোর জন্য তো ভ্যান চালাতেই হবে।
হাতীবান্ধা মেডিকেল আবাসিক অফিসার আনারুল হক বলেন, কয়েকদিন শীত কম থাকলেও দুদিন থেকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা জনিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য শিশু-বৃদ্ধের খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোন প্রকার ঠান্ডা না লাগে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ১ মাস ধরে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।