'বদলি নয়, নির্যাতনকারী কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে’
বদলি কোন বিচার না। নির্মম নির্যাতনকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল নেতা কাজী সাইফুল
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
গুমকারী কর্মকর্তাদের অধিকাংশই এখনো বহাল তবিয়তে আছেন দাবি করে করে কাজী সাইফুল বলেন, কাউকে হয়তো বদলি করা হয়েছে। হয়তো কেউ পুলিশে ছিল তাকে নেওয়া হয়েছে ডিবিতে, ডিবি ঢাকায় থাকলে অন্য জায়গায় নেওয়া হয়েছে। এটাতো বিচার না। নির্মম নির্যাতনকারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল নেতা কাজী সাইফুল বলেন, গুম এমন একটা শব্দ, যেটা শুনলে মানুষ আঁতকে উঠে। যারা গুমের শিকার হয়েছেন, যাদের পরিবার গুমের শিকার হয়েছেন একমাত্র তারাই এটা উপলব্ধি করতে পারবেন।
কাজী সাইফুল বলেন, আমি দুইদিন গুম ছিলাম। বিএনপির হরতাল কর্মসূচিতে মিছিল করার অপরাধে আমাকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ আমলে গুমের শিকার হওয়া তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল নেতা কাজী সাইফুল বলেছেন, আমাকে দুপুর ২টার সময় গুলশান থেকে ধরে নিয়ে যায়। ধরার পরে গাড়িতে উঠানো হতে শুরু করে আমার প্রতি অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। গাড়িতে উঠানোর পর থেকে নির্যাতন শুরু হয়। সেখান থেকে রাত ৪টা পর্যন্ত হাত-পা বেঁধে দফায় দফায় পেটানো হয়েছে। আমার পায়ের নিচে দুইশ-তিনশ লাঠির দাগ আছে।
তিনি বলেন, আমাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে ঝুলিয়ে শরীরের পিছন থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত পিটানো হয়েছে। এটা শেষ সময় যারা গুম হয়েছে তারাই জানে নির্যাতন কতটা অমানবিক ও হিংস্র। এদেশে এধরনের ঘটনা যে আর কোনদিন পুনরাবৃত্তি না হয়। এ গুমের সঙ্গে যে রাজনৈতিক সংগঠন জড়িত, প্রশাসন ও পুলিশ জড়িত তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ৬০০ শতাধিক ছাত্রদলের নেতাকর্মী গুম হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ছিল ছাত্রলীগের একটা ইউনিট। আর কত সময় গেলে তাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম ডিপার্টমেন্টাল ব্যবস্থা নিবেন? শুধু ট্রাইবুনালের জন্য ত বসে থাকলে হবে না। এর আগের প্রক্রিয়ায় তো দৃশ্যমান অগ্রগতি নাই।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে এক শিক্ষার্থীকে ধরে গুলি করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, যাত্রাবাড়িতে যে গুলি করেছিল সে সেই থানার এডিসি, একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশের ভাতিজা। কিন্তু এরপরে আর কিছু দেখলাম না। এখানে উদাসীনতা দেখলে বিচার হবে না। প্রত্যেকটা জায়গায় ওরা রয়ে গেছে। এটা কয়েকদিনে সরাতে পারবেন না কিন্তু আপনাদের আন্তরিকতায় স্পষ্ট ঘাটতি। আবার যদি চিন্তা করেন, একে সরিয়ে কাকে আনবো, বিএনপি না জামায়াত। সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে বাংলাদেশের মানুষকে ভোগাবে।