রাজধানীর জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট ও সশস্ত্র গ্রুপের সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেলসহ তার ১৪ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন (র্যাব)-৯ ও ২।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ও শুক্রবার (০১ নভেম্বর) সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা এলাকার জেনেভা ক্যাম্প এর আব্দুস সালামের ছেলে সোহেল প্রকাশিত বুনিয়া সোহেল (৩০), একই ক্যাম্পের সাব্বির হোসেনের ছেলে আমির হাসান হিরা (৩৬), সেলিম হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৭), মৃত মুসলিম এর ছেলে জামাল হোসেন (২৯) সোহেল রানার স্ত্রী মোছা. শাহিনুর (৩২), জেনেভা ক্যাম্প এর মৃত ইলিয়াস এর মেয়ে নুরী বেগম (৩০) ও ছেলে মিঠুন (২৪), মৃত লোকমান এর ছেলে সাহিল (৩৮) নাদিম এর ছেলে নাঈম (২৪), মো. নাসিমের ছেলে মো. আজিম (৩৭), সোলায়মানের মেয়ে বানু বেগম (৫০) ও মৃত আকবর আলীর ছেলে সাবিক হাসান (২০), জেনেভা ক্যাম্পের নাসিমের ছেলে আমিন (২৮), মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ইকবাল (৩৮), মো. পলু কসাই'র ছেলে আসিফ মিয়া (৩৭)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন (র্যাব)-৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার মো. মশিহুর রহমান সোহেল।
শুক্রবার রাতে র্যাব-৯ জানায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল দীর্ঘদিন থেকে ক্যাম্পে গ্যাং কালচার চালু করেছে। বেশ কিছুদিন যাবৎ ‘চুয়া সেলিম’ ও ‘বুনিয়া সোহেল’ দুই গ্রুপেরর মধ্যে মাদক ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা থেকে প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ তারা লুট করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় তারা। সম্প্রতি কয়েকটি সংঘাতে জড়িয়েছে তারা। ব্যবহার করেছে এসব অস্ত্র, মহড়া দিতে দেখা যায় অস্ত্র নিয়ে। এছাড়াও লুটকৃত অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে তাদের। গোলাগুলিতে দুই মাসে নিহত হয়েছেন পাঁচ জন। আহত হয়েছেন এক’শর বেশি মানুষ। বুনিয়া সোহেলের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, খুন, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের দায়ে ১৮টি মামলা রয়েছে।
এসব অভিযোগের উপর ভিত্তি করে অভিযানে নামে র্যাব-৯ ও র্যাব-২। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট নগরীর কোতোয়ালি থানার দাঁড়িয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সিলেটে আত্মগোপনে থাকা মাদক সম্রাট সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় আরো ৫ জন সহযোগীকে গ্রেফতার করে তারা।
একইদিন বিকেল ৪টার দিকে র্যাব-৯ এর শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প'র দল হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার সাইহাম ফিউচার কমপ্লেক্স এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুনিয়া সোহেলের আরও ৭ সহযোগীকে গ্রেফতার করে।
পরে এ ঘটনার সূত্র ধরে শুক্রবার (১নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-৯ এর একটি টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব-৯ এর সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) মো. মশিহুর রহমান সোহেল জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের জন্য র্যাব-২ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।