নকল প্রসাধনী রোধে অভিযানের নির্দেশ মানবাধিকার কমিশনের
মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে ও বাজারে নকল প্রসাধনী রোধে দ্রুত অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমানের গণনাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তি এই তথ্য জানা যায়।
ইউশা রহমান জানান, গণমাধ্যমে ‘নকল প্রসাধনীতে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে এসেছে। নকল প্রসাধনী উৎপাদন ও বিক্রি করা একদিকে যেমন ক্রেতার সাথে আর্থিক প্রতারণা অন্যদিকে এসব নকল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীদের মাঝে চর্মরোধ, স্কিন ক্যান্সার, কিডনি রোগসহ বন্ধ্যাত্বের মতো নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নকল প্রসাধনী উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানসহ তা উৎপাদন বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা আবশ্যক। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যসহ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন-এর উপযুক্ত প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সমীচীন মর্মে কমিশন মনে করে।
গণনাধ্যমে খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভোক্তা অধিকার এক ধরনের মানবাধিকার যা কিছু স্বার্থান্বেষী ও অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসায়ীর কারণে ও যথাযথ তদারকির অভাবে বিঘ্ন হতে পারে। নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার নিশ্চিত করার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের একাধিক সংস্থা সম্পৃক্ত হলে বৃহৎ পরিসরে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় জানা যায় যে, সুদৃশ্য মোড়কে নামি-দামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন বাজার ও সুপার মার্কেটে। নকল ও অবৈধ এসব প্রসাধনীর কারবারে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এসব প্রসাধনী ব্যবহার করে প্রতারিত হয়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে ভোক্তাসাধারণ। বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নোংরা পরিবেশে দেশেই এসব প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। বিভিন্ন নামি-দামি বিদেশি ব্র্যান্ড সেঁটে দেওয়া হয় প্রসাধনী সামগ্রীর প্যাকেটে। পরে বাজারজাত করা হয়। এসব ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহার করে চুলকানিসহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব নকল প্রসাধনী ব্যবহারে চর্মরোগ, স্কিন ক্যানসারসহ নানা ধরনের রোগ বাড়ছে। একই সঙ্গে পণ্য ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন।
বর্ণিত প্রেক্ষাপটে, নকল প্রসাধনী উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনের সদস্যসহ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন-এর প্রতিনিধির সমন্বেয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর-কে বলা হয়েছে।
আদেশের অনুলিপি মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর; মহাপরিচালক, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।