মেহেরপুরে জেলা আ.লীগের সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক আটক
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম শফিকুল আলমকে আটক করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে নিজ বাসা থেকে তাদেরকে আটক করে র্যাব-১২ গাংনীস্থ ক্যাম্পের একটি অভিযান দল।
বিজ্ঞাপন
এমএ খালেক সদ্য সাবেক গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং একেএম শফিকুল আলম ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করার জন্য তারা দুজন নিজ নিজ বাড়িতে আওয়ামী সমর্থিত লোকজন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এ কারণে তাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করার লক্ষ্যে গাংনী থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
আটক দুজনকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে গাংনী থানা সূত্রে জানা গেছে।
আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ঢাকার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং অন্যান্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট আন্দোলন প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এবং বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। একটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় পাওয়া শিক্ষাখাতে শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। এ সব দাবি-দাওয়ার মধ্যে ন্যায্য-অন্যায্য এবং কিছুক্ষেত্রে পরস্পর বিরোধী দাবিও আছে। একটি বৈষম্যবিরোধী দাবি মানলে অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
আরও বলেন, শিক্ষাখাতের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবিপূরণের সুদূর প্রসারী প্রভাব থাকে এবং এর জন্য তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া কঠিন, অথচ সব কয়টি দাবির পেছনের আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছেন এবং দাবিগুলোকে শুধু রাস্তায় আন্দোলন করে তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য মনে করছেন। এতে একদিকে যেমন রাস্তা অবরোধের ফলে অপরিসীম জনদুর্ভোগ হচ্ছে; সরকারও দাবিগুলো যথাযথ বিবেচনার সুযোগ পাচ্ছে না।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনার জন্য সরকার ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে যা সাত সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। সমস্যাটির শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে ঢাকার সাতটি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতা থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার একটি অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের উভয়পক্ষেরই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধা ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। সমস্যাগুলো জটিল এবং এগুলোর সুষ্ঠু সমাধান কী হতে পারে তা বিবেচনায় ন্যূনতম কিছু সময়ের প্রয়োজন। এরই মধ্যে একটি কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করেছেন। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সমস্যাসঙ্কুল শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি একজন আজীবন শিক্ষক হিসেবে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে আমার সকল সহানুভূতি আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে রাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, আন্দোলন ও আলটিমেটামের মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেবার কোনো নজীর কোথাও নেই। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ধৈর্য ধরার ও নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান উপদেষ্টা।
কোটি কোটি টাকার ভবন আর অর্ধশত কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম সব পড়ে আছে বছরের পর বছর। শুধু একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসক ও একজন টেকনিশিয়ান না থাকায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ বছরেও শুরু হয়নি এনজিওগ্রাম ও হার্টের রিং স্থাপনের চিকিৎসা।
একজন হার্টের রোগীর পূর্ণাঙ্গ সেবা দেওয়ার জন্য সিসিইউ, আইসিইউ, ক্যাথল্যাবসহ প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা হাসাপাতালে থাকা সত্বেও চিকিৎসকের অভাবে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরিয়তপুরসহ আশে পাশের জেলার লাখো দরিদ্র রোগী সরকারি ভাবে হার্টের উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে ফরিদপুর মেডিকেলে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাইরে চকচক করলেও ভিতরে অনেকটা রহস্যে ঘেরা। কোটি কোটি টাকার ভবন আর অর্ধশত কোটি টাকার চিকিসার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে না বছরের পর বছর। বক্সবন্দী পরে থেকে অনেক মালামাল নষ্টও হচ্ছে। তবে এগুলো কারো যেন কোন মাথা ব্যথা নেই।
২০১৭ সালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সে সময়ে বহু আলোচিত পর্দা কেলেঙ্কারির কালো তালিকা ভূক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আহম্মেদ এন্টারপ্রাইজ। জাতীয় বক্ষব্যাধী ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাজ্জাদ মুন্সীর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ক্যাথল্যাব, ২৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা মূল্যের এমআরআই মেশিন, ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, রেডিও থেরাপী মেশিনসহ অর্ধশত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি রোগীদের কোন কাজে আসছে না।
ফলে হার্টের সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা এনজিওগ্রাম বা হার্টে রিং স্থাপন করতে পারছেন না। যারা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন তাদের বাধ্য আশে পাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন ক্লিনিকি ও হাসপাতাল গুলোতে অধিক টাকায় সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ অর্থভাবে চিকিৎসা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ফলে বিনা চিকিৎসায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে এই সেবা চালু করা গেলে স্বল্প খরচে রোগীরা সেবা নিতে পারতেন।
ফরিদপুর শহরের মিজানুর রহমান মিজান নামের একজন হার্টের রোগী বলেন, আমার ছোট বেলা থেকে হার্টে সমস্যা। আমি যে বেতন পাই সংসার চালিয়ে চিকিৎসা করা কঠিন। তারপরও কয়েক মাস পরপর ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। আমি যদি ফরিদপুর শহর থেকে চিকিৎসা করাতে পারতাম সবদিক থেকে আমার জন্য সহজ হতো। তিনি বলেন, ঢাকায় গেলে একা যাওয়া যাই না। তারপর একদিন থাকতে হলে হোটেলে থাকতে হয়। হোটেলে খাওয়া সব মিলিয়ে খরচ বেড়ে যায়। সব ব্যবস্থা থাকতেও ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা নিতে না পারা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য।
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি শিপ্রা রায় বলেন, এতো টাকার যন্ত্রপাতি থাকার পরও শুধু একজন চিকিৎসকের অভাবে ফরিদপুরসহ আশেপাশের জেলার মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। আশাকরি যথাযত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্রত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হার্টের রোগীর জন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শূন্যপদে নিয়োগে তৎপর হবেন।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে গত কয়েক বছর সেখানে ব্যাপক কমিশন বাণিজ্য লুটপাট হয়েছে। শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনলেও তার গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যার ফলে এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে রোগীর সেবা দিতে পারছে না।
তিনি বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাও ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে যার কারণে এই হাসপাতালে রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা ফরিদপুরবাসী এর থেকে পরিত্রাণ চাই।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামালউদ্দিন আহম্মেদ বলেন,আমাদের হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, রেজিস্টার, সহকারীসহ বেশ কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান হলেই আমরা আমাদের হাসপাতালে হার্টের এনজিওগ্রাম ও রিং স্থাপনের মতো উন্নত চিকিৎসা শুরু করতে পারি।
তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের পরিচাল ডা. হুমায়ূন কবিরকে একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের ৩ কর্মী নিহত হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের শান্তি রঞ্জন পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ইউপিডিএফ কর্মী সিজন চাকমা, শাসন ত্রিপুরা ও জয়েন চাকমা ঘটনাস্থলে নিহত হয় বলে দাবি করেন ইউপিডিএফর সংগঠক অংগ্য মারমা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউপিডিএফ।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দীন জানান, সকালে পানছড়ির লতিবান ইউনিয়নের শান্তি রঞ্জন পাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আঞ্চলিক সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউপিডিএফর ২-৩ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনছি। দুর্গম এলাকা হওয়ায় পুলিশ এখনও পৌঁছাতে পারেনি।
নিজেদের জন্য আলাদা স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজও রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১১টার দিকে তারা এই অবরোধ করেন। এতে সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।
যতক্ষণ পর্যন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় তাদেরকে ‘অধিভুক্তি নাকি মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, মানি না, মানব না’, ‘আর নয় দাসত্ব, হতে চাই স্বতন্ত্র’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তিপাক’, ‘নিপীড়ন নাকি অধিকার, অধিকার, অধিকার’, ‘প্রশাসনের প্রহসন, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর আগে গতকালও একই দাবিতে অবরোধ করে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো
১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে।
২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করবে।
৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোনো সেশনজট তৈরি হতে পারবে না। যতদিন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে ততদিন সেশনজট যেন না হয় সেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে
উল্লেখ্য, সরকারি সাত কলেজ হলো, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।