পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কি.মি. দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮২০ কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬০ কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১ নং আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কি.মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয় যেতে পারে।
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় সরকারি জলমহাল রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের নাজিরদীঘি এলাকায় জলমহালের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনের পূর্বে ভূমিদস্যু হটাও নাজিরদিঘী বাঁচাও এই স্লোগানে মিছিল করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানায়, বৃটিশ আমল থেকে প্রকৃতিকভাবে পাওয়া উছমানপুর ইউনিয়নের নাজিরদীঘি জলমহাল। ১৯৭৮ সালে সরকারি বন্দোবস্তায় ২৪ একর ৮৪ শতাংশ জায়গার জলমহাল লিজ নিয়ে মাছ চাষসহ হাসঁ, মুরগি ও গরু পালনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে জিবিকা নির্বাহ শুরু করে স্থানীয়রা। শুরুতে এখানে বসতি কম থাকলেও বর্তমানে এই জলমহালের পাশে ২ হাজার মানুষের বসতি রয়েছে। সবাই কোনো না কোনো ভাবে জিবিকা নির্বাহে এই জলমহালের সাথে জড়িত রয়েছে। এই জলমহালে পানি দিয়ে হাওরের ২শত একর জমি চাষবাদ করে থাকে এখানকার কৃষকরা।
এসময় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বাজিতপুর থানার নোয়াপাড়া গ্রামের দিলালপুর ইউনিয়নের বেলায়েত হোসেনের ছেলে মোশারফ জাল দলিল তৈরি করে নাজিরদীঘি এলাকার মানুষদের হয়রানি করছেন। দলিল জাল করে জলমহাল আত্মসাতের চেষ্টার প্রতিবাদে মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মোশাররফের বিচারের দাবি করেন তারা।
রাজধানীর পল্লবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. ইমন হোসেন আকাশ হত্যা মামলায় পল্লবীর ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজকে (৩০) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পল্লবী থানা পুলিশ।
এর আগে গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় পল্লবী থানা এলাকা হতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পল্লবী থানা সূত্রের বরাত দিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃত পারভেজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ইমন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি। গত ৪ আগস্ট বিকেলে পল্লবী থানার মিরপুর-১০ বাস স্ট্যান্ডের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে সড়কে আরো অনেক ছাত্র-জনতার সাথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল ইমন। এ সময় আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আক্রমণকারীরা ককটেল বিস্ফোরণসহ এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করলে গুলিতে ইমন গুরুতর আহত হয়। আহত ইমনকে স্থানীয় ডা. আজমল হাসপাতাল লিমিটেডে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ইমনের মা বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন।
পরে তদন্তাধীন এ মামলায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ইমন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ইমন হত্যা মামলায় গত ৩ অক্টোবর পল্লবী থানা যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ওয়াসিম; ৫ অক্টোবর পল্লবী থানার ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আকবর হোসেন জনি; ১৯ অক্টোবর ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আশিকুল ইসলাম শান্ত এবং ২০ অক্টোবর ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মো. মিন্টুকে গ্রেফতার করেছিল পল্লবী থানা পুলিশ।
রাজধানীর সড়কে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠানামাসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ দিনের যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ফলে যানজটের নিরসন ঘটিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’র সবগুলো ট্রাফিক বিভাগ।
এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই ধারাবাহিকতায় যারা সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং আইন অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ।
গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৫৩৮টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্তে ৬২ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ৭২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাত-দিন কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ১৫৩৮ টি মামলা করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এ সংক্রান্তে ৬২ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও অভিযানকালে ৭২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
এদিকে এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের সমাধান খুঁজতে পুলিশ ও দেশের অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের যানজট কমাতে হবে। অবিলম্বে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে’।
বৈঠকে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের অন্তত একটি ট্রাফিক করিডোরে তাদের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় কিছু ঘরোয়া সমাধান খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। তাদের স্থানীয় দক্ষতা ব্যবহার করে সিগন্যালিং সিস্টেম ঠিক করতে বলা হয়। ট্রাফিক সমস্যার কিছু দ্রুত ও কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করতে ডিএমপিকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুয়েটের পরিবহন ও ট্রাফিক সিস্টেম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বৈঠকে একটি প্রেজেন্টেশন দেন। তিনি বলেন, শুধু ঢাকা শহরে যানজটে প্রতিবছর দেশের অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খ. নাজমুল হাসান বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরও ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করার পর ট্রাফিক পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ সম্পূর্ণ মোতায়েন আশা করা হচ্ছে।
বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান এবং ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ফারুক আহমেদ।
কুষ্টিয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায় তিন দিনের এই লাঠি খেলার উদ্বোধন করা হয়।
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট গ্রামের ‘আপডেট কুষ্টিয়া’ ফেসবুক পেজ ও ‘সাপ্তাহিক পথিকৃৎ’ পত্রিকা ব্যানারে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী অর্পণ মাহমুদের উদ্যোগে ষষ্ঠবারের মতো তিন দিনব্যাপী এই লাঠিখেলা শুরু হয়।
লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। ঢোলের তালে তালে, লাঠিয়ালদের অঙ্গভঙ্গি ও নানা কসরতের মাধ্যমে দর্শকদের মন মাতানো এ খেলায় বিভিন্ন এলাকার শতাধিক লাঠিয়াল অংশগ্রহণ করেন।
লাঠিয়ালরা দল বেঁধে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খেলার মাঠ বা খোলা জায়গায় তাদের কসরত দেখাচ্ছেন। সাধারণ মানুষও হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য মুগ্ধ হয়ে দেখছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাদ্যের তালে তালে ঘুরছে লাঠি। লাঠিয়ালদের কলা-কৌশলও নজরকাড়া। শক্ত হাতে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে নানা কৌশলে লাঠি চালিয়ে যাচ্ছেন। পঞ্চাশ জনের এই দলে খণ্ড খণ্ড আকার হয়ে বাজনার তালে তালে লাঠির কলাকৌশল প্রদর্শন করছেন।
লাঠিয়াল মো. সাদেক আলী জানান, পারিবারিকভাবেই আমরা লাঠিখেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাপ-দাদা থেকে পাওয়া শিক্ষা এটি। ঐতিহ্যবাহী এ খেলায় যেমন দর্শকরা আনন্দ পায় তেমনি এ খেলার মাধ্যমে আত্মরক্ষার নানা দিক তুলে ধরা হয়। এ থেকে নিজের আত্মরক্ষাও শেখা যায়। তবে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এখনও টিকিয়ে রেখেছি। এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি ব্যবস্থাপনা জরুরি বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা থেকে লাঠি খেলা দেখতে এসেছিলেন আবু ওবাইদা আল মাহদী।
তিনি বলেন, শুনেছি এক সময় আউশ ধান কাটার মৌসুম শেষ হলে লাঠি খেলায় মেতে উঠতেন গ্রামের মানুষ। বাড়ির উঠোন কিংবা ধানের খোলায় আসর বসত এই লাঠি খেলার। আগে কুষ্টিয়ার আশপাশের জেলাগুলোর প্রায় প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি লাঠিয়াল দল ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই খেলাটি আজ প্রায় বিলুপ্ত। অনেকদিন বাদে কুষ্টিয়ায় তিনদিনের লাঠি খেলা উৎসবের খবর শুনে তাই তিনি ছুটে এসেছি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাবেক বিপ্লবী সাংগঠনিক সম্পাদক,বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাড. শামীম উল হাসান অপুু বলেন, ‘লাঠি খেলা দেখে আমি মুগ্ধ। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এই খেলা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। তিনি বলেন, লাঠিখেলা চর্চা করলে আত্মরক্ষায় ভালো কাজ দিতে পারে। এই লাঠিখেলা যেন চালু থাকে আমরা তার ব্যবস্থা করব।
খেলার আয়োজক কমিটির আরেক সদস্য শাহরিয়ার ইমন জানান, কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত প্রায় এ লাঠিখেলা টিকিয়ে রাখতে হলে লাঠিয়ালদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। প্রতিবছর এই উৎসবের আয়োজন করি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন লাঠিয়ালদের উৎসাহ দেওয়া হয়, অন্যদিকে গ্রামবাসীদের আনন্দ দেওয়া হয়। এছাড়া নতুন প্রজন্ম এ খেলাটি সম্পর্কে জানতে পারে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
আয়োজক কমিটির আহবায়ক গণমাধ্যমকর্মী অর্পন মাহমুদ বলেন, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আবহমানকাল ধরে বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে এই লাঠিখেলা। মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নতুন প্রজন্ম গড়তে এ ধরনের খেলা টিকিয়ে রাখা দরকার বলেও জানান তিনি।
খেলায় অংশ নেওয়া জাহান আলী সর্দারসহ প্রবীণ লাঠিয়ালরা জানান, তারা প্রায় দুই যুগ ধরে বিভিন্ন এলাকায় লাঠি খেলা করে থাকেন। তবে এই খেলার সঙ্গে জড়িতরা প্রায় সবাই গরিব। তারা দুঃখ-দৈন্যে জীবনযাপন করেন। তাদের জন্য সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা নেই। তেমন কোনো ব্যবস্থা হলে নিয়মিত চর্চা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এই খেলাকে আরও বড় পরিসরে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবেন বলে আশাবাদী।
প্রসঙ্গত, লাঠিখেলা বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। ওস্তাদ ভাই সিরাজুল হক চৌধুরী গোল্ডেন সোর্ড ১৯৩৩ সালে বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করেন। ওস্তাদ ভাই সিরাজুল হক চৌধুরী প্রথমে নিখিল বাংলা লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন। পরে এর নাম হয় বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী।’