নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে ইলিশ বিক্রি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন সরকারি নিষিদ্ধ থাকলে তা তোয়াক্কা করছে না রাজবাড়ীর কিছু অসাধু জেলে। মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা অবাধে শিকার করছে মা ইলিশ। যেন মাছ ধরার মহোৎসব চলছে। আর এ সকল ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরে। অনেকেই আবার দিচ্ছেন হোম ডেলিভারির নিশ্চয়তা।

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকলেও রাজবাড়ীর সদর উপজেলা ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এ সকল ইলিশ মাছ।

বিজ্ঞাপন

সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী এলাকায় চলছে এসব ইলিশ বেচাকেনা। বিশেষ ক্ষেত্রে রাজবাড়ী শহরে এনে চোরাই ইলিশ হোম ডেলিভারীও দিচ্ছে অসাধু জেলে ও তাদের লোকজন।

এদিকে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে তারা নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেভাবেই হোক তারা এটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করবেন। নিয়মিত তারা অভিযান চালাচ্ছেন নদীতে। এরই মধ্যে তারা বেশ কয়েকজন জেলেকে জেল-জরিমানা করেছেন। এ অভিযান তাদের অব্যাহত থাকবে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় পদ্মা নদীতে জেলেদেরকে বেশি নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়ালজানি গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন অবৈধ সৌখিন জেলেরা নদী থেকে ইলিশ মাছ শিকার করে তারা নদীর তীরে এনেই বিক্রি করছেন। ১ কেজির উপরে বড় ইলিশ মাছগুলো তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা ও ছোট (জাটকা) ইলিশ মাছ ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন ।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়েও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট, লঞ্চ ঘাট, চলন্ত ফেরি ও লঞ্চে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীরা ডালিতে করে বিক্রি করছে ইলিশ মাছ।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর ৭ দিনে জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে ৪ জন জেলেকে কারাদণ্ড, ২৬ হাজার ৪০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এই সাত দিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহৃত অবৈধ ১.৬২৫ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ও ৩১০ কেজি ইলিশ মাছ জেলেদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।

দৌলতদিয়া ঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. এমরান হোসেন তুহিন বলেন, আমি সবেমাত্র দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে এসে যোগদান করেছি। এখন ইলিশ মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ। আপনাদের কাছ থেকে জেলেদের প্রকাশ্যে মাছ ধরা ও বিক্রির বিষয়টা জেনেছি। এরকম কোন ঘটনা ঘটে থাকলে আমার নৌ-পুলিশ নিয়ে নদীতে অভিযান চালাবো।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য অফিসার (অঃ দাঃ) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজিব বলেন, গোয়ালন্দের দেবগ্রামে ইলিশ মাছ শিকার ও বিক্রির বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা বিভিন্ন স্থানে সাধ্যমতো অভিযান পরিচালনা করছি।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, মাছ বিক্রির বিষয়টি আমি শুনেছি। মৎস্য অফিসারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষা করতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।