লালনের গানে মুখরিত ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি

  • এস এম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লালনের গানে গানে মাতোয়ারা ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি

লালনের গানে গানে মাতোয়ারা ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি

ছেঁউড়িয়া আখড়াবাড়ি থেকে: লালন সাঁইয়ের গানে গানে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৪ তম তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন শেষে উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় গানের আসর। চলে রাতভর।

বিজ্ঞাপন

শুরুতেই খেলাফত ধারী সাধুদের সমন্বয়ে দলীয় সঙ্গীত শুরু হয়। একসঙ্গে গেয়ে ওঠে ‘দয়াল ছেড়ে যেও না,,,,’ এরপর লালন একাডেমির শিল্পীদের সমন্বয়ে “ক্ষম ক্ষম অপরাধ, দাসের পানে একবার চাও হে দয়াময়। বড় সংকটে পড়িয়ে দয়াল বারে বার ডাকি তোমায়।”

এরপর একে একে লালন একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা ছাড়াও ক্লোজ আপ ওয়ান তারকা বিউটি, কাঙ্গালিনী সুফিয়া, টুনটুন বাউলসহ প্রখ্যাত শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন লালনের সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন, সত্য সুপথ না চিনিলে পাবিনে মানুষের দর্শন, মিলন হবে কতদিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে/ লালন তোমার আরশীনগর আর কতদূর/মানুষ ছাড়া খ্যাপারে তুই কূল হারাবি, মিলন হবে কতদিনে, মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি-জনপ্রিয় গানগুলো।

গভীর রাতে মঞ্চে ওঠেন লালনকন্যা খ্যাত শিল্পী নাসরিন আক্তার বিউটি। তিনি বলে ওঠেন প্রতিবছরই মনের টানে আমি এই লালনের আখড়াবাড়িতে চলে আসি। লালন একাডেমিও যথাযোগ্য সম্মানের সাথে আমন্ত্রণ জানায়। গানে গানে সাঁইজিকে স্মরণ করতেই আমার এখানে ছুটে আসা।


ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা শুরু হয়েছে। এ মেলা শনিবার পর্যন্ত চলবে। তবে আজ দুপুরে পুর্ণসেবার মধ্য দিয়ে ভাঙ্গবে সাধুর হাট। কেউ কেউ চল যাবেন নিজ গন্তব্যে। আবার কেউ কেউ রয়ে যাবেন আরও কয়েকটা দিন।

এদিকে লালন মেলা উপলক্ষে মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। মাজার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।

অনিক আহমেদ নামের এক দর্শনার্থীরা বলেন, লালন মেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে। লালন ভক্ত-অনুসারী ও গুরু-শিষ্যদের আস্তানাগুলো দেখতে খুব সুন্দর। তবে এখানে আসলে লালনের প্রকৃত সুরের গান শুনতে পাওয়া যায়।

১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর (১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক) কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে ফকির লালন শাহ দেহত্যাগ করেন। এজন্য প্রতিবছর পহেলা কার্তিক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর তিরোধান দিবসের আয়োজন করে লালন একাডেমি।