এইচএমপিভি আক্রান্তের ঝুঁকিতে কারা!

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারির পর বিশ্বে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। চলতি জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। 

ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এই ভাইরাস নিয়ে এখনও কোনো সতর্কতা জারি করেনি।

বিজ্ঞাপন

তবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের সচেতন থাকা জরুরি। বয়সের তারতম্যের কারণে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে জানাচ্ছেন ভারতীয় চিকিৎসক আশিস নন্দী। এইচএমপিভি থেকে যাদের ঝুঁকি বেশি, তিনি তাদের চারটি ভাগে ভাগ করেছেন।


১। শিশু এবং বালক-বালিকা

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসকের মতে, এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু পরিণত হয়নি, তাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ফুসফুসে সংক্রমিত হয় এমন যেকোনও ভাইরাসের মতোই হবে এইচএমপিভির উপসর্গ। জ্বর, কাঁশি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া। খুব ছোট শিশুদের হাইপক্সিয়া এবং ডিহাইড্রেশনও হতে পারে।

২। বয়স্করা

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রোগপ্রতিরোধ শক্তিও দুর্বল হয়। ফলে যেকোন সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যায়। সিওপিডির বা হার্ট ফেলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এইচএমপিভি।

৩। কোমর্বিডিটি থাকলে

শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস থাকলে বা এমন যেকোনও রোগ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, তা থাকলে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কমবে।

এর কারণে রোগের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, নতুন কোনও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যান্য রোগীর তুলনায় তাদের সুস্থ হতে বেশি সময় লাগতে পারে।

৪। অপুষ্টির সমস্যা থাকলে

পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের ২০২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, না খেতে পাওয়া জনগণের সংখ্যার মাপকাঠিতে ১২৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। পাশাপাশি দেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে।


কীভাবে সতর্ক হবেন?

ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই দেখা যায় যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হয়েছে । তবে সতর্ক থাকলে তার প্রভাব অনেকটাই এড়ানো যায়। কমানো যায় শারীরিক ক্ষতিও। চিকিৎসক নন্দী বলছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি জীবনযাত্রারও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

১। টিকা: এইচএমপিভি ভাইরাসের জন্য এখনও কোন টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, ভবিষ্যতে তেমন টিকা আবিষ্কার হলে তা নিয়ে নেওয়া উচিত।

২। চিকিৎসা: চিকিৎসক নন্দীর মতে, মোনোক্লোনার অ্যান্টিবডিজ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৩। পরীক্ষা: উপসর্গ দেখলে এইচএমপিভির পরীক্ষা করতে হবে।

৪। অসুখের যত্ন: যাদের ডায়াবটিস বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন। দরকার হলে যত্ন নিন।

৫। জীবনযাত্রা রদ-বদল: নিয়মিত হাত ধোয়া, মুখে-নাকে হাত না দেওয়া, মাস্কের ব্যবহার এবং যতটা সম্ভব জমায়েত এড়িয়ে চলা।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার।