গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদিরসহ আ.লীগের ১১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১১৭ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিস্ফোরক আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ হোসেন মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

গত ৪ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রসহ সাধারণ জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা শহরের বাসিন্দা হুসাইন মোহাম্মদ আবুল বাশার বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সদস্য ও সাবেক ভিপি হাসান সারওয়ার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ব্যক্তিগত সহকারী এম এ এইচ মাহবুব আলম ও আরেক ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিকাইল হোসেন, পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন ও ঠিকাদার হামদু মিয়া, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ও সাবেক চেয়ারম্যান আঙ্গুর হাজারী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মেহদী হাসান, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরে মাওলানা ফারানী প্রমুখ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের এক দফা দাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে মামলার বাদী হুসাইন মোহাম্মদ আবুল বাশারসহ ছাত্র জনতা ও সাধারণ জনগণ একাত্মতা ঘোষণা করে। গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের খৈয়াসার চৌরাস্তা মোড় থেকে সাধারণ ছাত্র ও জনতা ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের শহরতলীর বিরাসার মোড়ে পৌঁছে। সেসময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও মহিলা লীগসহ ফ্যাসিবাদী সরকারের বিভিন্ন সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী দা, লাঠি, লোহার রড, কিরিজ, পিস্তল, বল্লম, পেট্রোল, কেরোসিন, ককটেল, হাত বোমা ইত্যাদি নিয়া বেআইনিভাবে একত্রিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলের চারদিকে ঘেরাও করে। সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদিরের হুকুমে ও নেতৃত্বে মামলার আসমাীরা মিছিলকে উদ্দেশ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। ককটেল বিস্ফোরণের কারণে চারদিক ধোয়ায় আছন্ন হয়ে পড়ে। তাদের ছোড়া ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে হুসাইন মোহাম্মদ আবুল বাশারসহ এলাকার কয়েকজন সাধারণ মানুষ আহত হয়। মামলার আসামিরা হাতে থাকা কেরোসিন ও পেট্রোল ঢেলে হুসাইন মোহাম্মদেরসহ ১০-১৫টি মাটর সাইকেল ও আশেপাশের দোকান পাটে আগুন ধরিয়ে দেন। সবগুলো মোটরসাইকেল ও আশেপাশের দোকান পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। এতে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে আসামিরা হাতে থাকা লোহা রড, হকিস্টিক, কিরিচ, বল্লম দিয়ে কুপিয়ে আশেপাশের দোাকানসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মিছিলে আসা বেশ কয়েকজন ছাত্রকে আঘাত করে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেনের হাতে থাকা পিস্তলের গুলি মামলার ১ নম্বর সাক্ষী বিরাসার গ্রামের বাসিন্দা রাশেদ মিয়ার বুকে বিদ্ধ হয়। তিনি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন। তাদের পিস্তালের গুলিতে বেশ কয়েকজন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা ইট, পাটকেল ও ককটেল ছুড়ে মিছিলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ জনগণ প্রাণ ভয়ে ছুটাছুটি শুরু করে। তারা ইটপাটকেলসহ ককটেল বিস্ফোরণ করে ঘটনাস্থলে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে। পরে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।