কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের একক নেতৃত্বে আল্লামা শফী

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শনিবার নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আল্লামা শফী, ছবি: সংগৃহীত

শনিবার নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আল্লামা শফী, ছবি: সংগৃহীত

কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রয়োজনে ইতিপূর্বে গঠিত খতমে নবুওয়ত আন্দোলন সম্পর্কিত সকল সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণা করে ‘আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এই সংগঠনের নেতৃত্ব দেবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে আল্লামা আহমদ শফীকে প্রধান বানিয়ে সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে আল্লামা আহমদ শফী ছাড়া সবাই সদস্য।

সভায় উপস্থিত দেশের শীর্ষ আলেমরা শায়খুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে ‘আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ উদ্দেশ্যে সকল বিভাগীয় শহরে মহাসম্মেলন করে ৫ সেপ্টেম্বর, শনিবার ঢাকায় স্মরণকালের বৃহত্তম গণসমাবেশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় টাঙ্গাঈলের বাউল শরিয়ত সরকার বয়াতির হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং সরকারের নিকট এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি মো. ওয়াক্কাস, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহারডাঙ্গা বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি রুহুল আমীন, মহাসচিব মাওলানা শামসুল হক, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মাওলানা আবু তাহের নদভী, সহকারী মহাসচিব মুফতি শাসমুদ্দীন জিয়া, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল হক, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর, তানজিমুল মাদারিসিদ দীনিয়া বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা আরশাদ রাহমানী, জাতীয় দীনী শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মাদ আলী।

কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সংস্থা হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার দপ্তর সম্পাদক মু. অছিউর রহমান কর্তৃক পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আরও উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব মধুপর), মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি জসীমুদ্দিন, মাওলানা আনাস মাদানী, মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা মোশতাক আহমদ, মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী ও মুফতি মীজানুর রহমান সাঈদ।

এর আগে আল্লামা শফী কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা না করলে সরকারের সঙ্গে না থাকার ঘোষণা দেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) কাদিয়ানী সাম্প্রদায়কে (আহমদিয়া মুসলিম জামায়াত) রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জে মহাসম্মেলনে আল্লামা শফী বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে আছি। সরকারের কোনো ভয় নেই। তবে আমাদের দাবিও রয়েছে। কাদিয়ানীরা রাসূল (সা.) কে শেষ নবী মানে না। তাই আমরা তাদের কাফের ঘোষণা করেছি, আমরা চাই সরকারও তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করুক। এ দাবি না মানলে আমরা সরকারের সঙ্গে নাই।

ওই সমাবেশে হেফাজতে ইসলামীর মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীসহ দেশে শীর্ষ আলেমরা বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন খতিব মাওলানা উবায়দুল হক (রহ.)। তার মৃত্যুর পর আল্লামা শফীকে আমির ঘোষণা করা হয়। সংগঠনে সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা নুরুল ইসলাম।

এই সংগঠন ছাড়া সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ, খতমে নবুওয়ত মারকাজ, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্ট বাংলাদেশ, খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ ও খতমে নবুওয়ত আন্দোলন নামে কয়েকটি সংগঠন কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

আজকের ঘোষণায় এসব সংগঠনের নেতারা আল্লামা আহমদ শফীর আহ্বানে তার নেতৃত্ব একীভূত হবেন কিনা, সে সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।