প্রায় সাড়ে চার মাস বন্ধ থাকার পর নামাজের জন্য দেওয়া হলো শ্রীনগর জামে মসজিদ। গত ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস’ তুলে নেওয়ার পর থেকে বন্ধ ছিলো মসজিদটি। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এখানে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। খবর এনডিটিভির।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের সময় মসজিদটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর মসজিদের ইমাম মুফতি গোলাম রাসুলের ইমামতিতে প্রায় ৭০ জন মুসল্লি জোহরের নামাজ আদায় করেন।
স্থানীয়দের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে কখনও এতদিন বন্ধ থাকেনি ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত মসজিদটি।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সংবাদ সংস্থা এএফপিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা মুহাম্মদ ইকবাল (৫৫) বলেন, ‘আমি বাড়িতেই ছিলাম, হঠাৎ মসজিদে আজান শুনতে পেলাম। খেয়াল করে দেখলাম, জামে মসজিদ থেকে ভেসে আসছে আজানের সুর। আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, দৌঁড়ে গিয়ে সাড়ে চার মাস পর নামাজের শরিক হলাম।’
তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমি আবার নিঃশ্বাস নিতে পারছি, নিঃসন্দেহে আমার খুশির কোনও সীমা নেই আজ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- কাশ্মীর সমস্যার সমাধান এখনও হয়নি।’
শ্রীনগরের জামে মসজিদটি এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ মসজিদ। একতলা মসজিদটি দেখতে অনেকটা রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো। এর নির্মাণশৈলী যেকোনো দর্শনার্থীর নজর কাড়ে।
১৩৯৪ সালে সুলতান শিকান্দার শাহ সাইয়্যেদুল আউলিয়া সাইয়্যেদ আলী হামদানির ছেলে মীর মোহাম্মাদ হামাদানির নির্দেশে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মূল মসজিদ, মসজিদের আঙিনাসহ আশপাশ এলাকা মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ লোক এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন। লাইলাতুল কদর, ঈদের জামাত ও অন্যান্য বিশেষ দিনে মুসল্লিদের ভিড় দেখা যায় বেশি।
মসজিদের মোট পরিধি ১ লাখ ৪৬ হাজার বর্গফুট। মসজিদের ভেতরে রয়েছে ৩৭৮টি সম্পূর্ণ গাছের পিলার, যার মধ্যে ২১ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট পিলার ৩৪৬টি। আর ৪৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট পিলার রয়েছে ৩২টি।