হজের পরামর্শক আলেমরা রাষ্ট্রপতির ভোজে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গভবন

বঙ্গভবন

হজযাত্রীদের ধর্মীয় ও বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতে ৫৮ ওলামা মাশায়েখকে সৌদি পাঠাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় খরচে আলাদাভাবে ওলামা মাশায়েখদের এ বছরই প্রথম হজে পাঠানো হচ্ছে। ইতিপূর্বে কখনও সরকারি খরচে আলেমদের হজে পাঠানো হয়নি। আর হজে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের বিশেষ আমন্ত্রণে হজগামী ৫৮ বিশিষ্ট আলেম সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নৈশভোজে অংশ নেবেন এবং রাষ্ট্রপতি থেকে বিদায় গ্রহণ করবেন।

জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ৫৮ সদস্য বিশিষ্ট ওলামা মাশায়েখ টিমে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে মাওলানা আনাস মাদানী, আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলীসহ একাধিক হেফাজত নেতা রয়েছেন। ওলামা মাশায়েখ টিমে বয়োবৃদ্ধ কয়েকজন আলেমও রয়েছেন। যাদের দেখাশোনার জন্য আলাদা মানুষের প্রয়োজন হয়। এছাড়া তালিকায় থাকা কয়েকজন আলেমের সঙ্গে তাদের ছেলেরা সৌদি আরব যাবেন।

বিজ্ঞাপন

সরকারি খরচে আলেমদের হজে পাঠানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, এর মাধ্যমে হেফাজতসহ কিছু আলেমদের খুশি করা হচ্ছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় খরচে ওলামা-মাশায়েখদের যে দলটিকে হজে পাঠানো হচ্ছে, শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তাদের সম্মানে রাষ্ট্রপতি নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। সেখানে আলেমদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করবেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে ৫৮ আলেম শনিবার বিকালে বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে বঙ্গভবনের উদ্দেশে রওনা করেন।

এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ৪ ও ৫ আগস্ট ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে ওলামা মাশায়েখদের দলটি সৌদি আরব যাবেন। ২৩ আগস্ট তারা দেশে ফিরে আসবেন। এটি রাষ্ট্রীয় খরচে হজ সফর হিসেবে গণ্য হবে। তাদের ভ্রমণ ব্যয় এ বছর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশের বাহিরে হজ বাবদ ব্যয়’ খাতে বরাদ্দ রাখা অর্থ থেকে বহন করা হবে। সরকারি হজযাত্রীদের প্যাকেজের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন তারা। তবে এসব আলেম হজযাত্রীদের কীভাবে পরামর্শ দেবেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে তালিকাভুক্ত আলেমদের নাম-

মাওলানা আশরাফ আলী (কো-চেয়ারম্যান,আল হাইয়াতুল উলইয়া), মাওলানা আবদুল হালিম বোখারি (প্রিন্সিপাল, পটিয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম), মুফতি রুহুল আমীন (প্রিন্সিপাল, গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা, গোপালগঞ্জ), মাওলানা জাফর আহমদ (প্রিন্সিপাল, ঢালকানগর মাদ্রাসা, ঢাকা), মাওলানা ইয়াকুব আলী খন্দকার (সুপারিনটেন্ডেন্ট, চমকপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কিশোরগঞ্জ), মাওলানা শাহ মোহাম্মদ তৈয়ব, (মুহতামিম জিরি মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম), মাওলানা আনাস মাদানী (আহমদ শফির ছেলে ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক), মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস (মহাসচিব, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, ঢাকা), মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ (ইমাম, শোলাকিয়া ঈদগাহ, কিশোরগঞ্জ), মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী (প্রিন্সিপাল, জামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর, চট্টগ্রাম), মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী (চরমোনাই পীরের ভাই ও প্রিন্সিপাল, চরমোনাই আলীয়া মাদ্রাসা, বরিশাল), মাওলানা সৈয়দ মো. শরাফত আলী (প্রিন্সিপাল, শর্ষিনা আলিয়া মাদ্রাসা, পিরোজপুর), মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন (প্রিন্সিপাল, আকবর কমপ্লেক্স মিরপুর, ঢাকা), মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ (মুহতামিম, শায়েখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা)।

তালিকায় আরও আছেন- মাওলানা ইয়াহিয়া মাহমুদ (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম রামপুরা বনশ্রী, ঢাকা), মুফতি মোহাম্মদ আলী (মুহতামিম, আফতাবনগর মাদ্রাসা, ঢাকা) মুফতি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া (প্রধান মুফতি, লালবাগ মাদ্রাসা, ঢাকা), মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী ( মুহাদ্দিস, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, ঢাকা), মাওলানা শামসুল হুদা খান (মুহতামিম, হিলি মাদ্রাসা, দিনাজপুর), মুফতি সাইফুল ইসলাম (প্রিন্সিপাল, বড় কাটারা মাদ্রাসা ও মেয়ের জামাই মুফতি আমিনী ) মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু (প্রিন্সিপাল, গহরপুর মাদ্রাসা সিলেট), মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন (ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের ছেলে ও প্রিন্সিপাল, ইকরা বাংলাদেশ ঢাকা), মাওলানা মো. আবদুর রাজ্জাক (অধ্যক্ষ, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, ঢাকা), মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গনি (মুহাদ্দিস, দারুন্নাজাত কামিল মাদ্রাসা, ঢাকা) মাওলানা রেজাউল করিম (শিক্ষক, পটিয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম), মাওলানা আবুল কাশেম ফজলুল হক (উপাধ্যক্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদ্রাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা), মাওলানা মোঃ নজরুল ইসলাম আল মারুফ (প্রিন্সিপাল, জামিয়া হোসাইনিয়া কামিল মাদ্রাসা, মহাখালী, ঢাকা), মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ (উপাধ্যক্ষ. সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, ঢাকা), মাওলানা শোয়াইব (শিক্ষক, জিরি মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম)।

মাওলানা শওকত আলী কাসেমি (মুহতামিম, বাগিবাড়ি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, নরসিংদী), মুফতি মিনহাজ উদ্দিন (ইমাম, চকবাজার শাহী মসজিদ, ঢাকা), মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম আলী (মুহতামিম, বাহিরদিয়া মাদ্রাসা, ফরিদপুর), মুফতি শামসুদ্দোহা (প্রিন্সিপাল, জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম, মৌলভীবাজার), মাওলানা মো. মুহিব্বুল হক (প্রিন্সিপাল জামিয়া দরগা সিলেট), মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (ইমাম ও খতিব জমিয়াতুল ফালাহ চট্টগ্রাম), মাওলানা মোস্তাক আহমেদ (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম মাদ্রাসা খুলনা), মাওলানা মোহাম্মদ নোমান (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম মাদ্রাসা, কুমিল্লা), বিশিষ্ট বক্তা মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা সৈয়দ অহিদুজ্জামান (প্রিন্সিপাল, জামিয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া, মিরপুর-পল্লবী), মাওলানা উসামা আমিন (শিক্ষক, গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা, গোপালগঞ্জ), মাওলানা ওয়াসিউর রহমান (প্রিন্সিপাল, জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া চট্টগ্রাম), মাওলানা মোঃ মাসুম বিল্লাহ (ইমাম, লোহাগড়া কেন্দ্রীয় মসজিদ, নড়াইল), হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু সালেহ মোহাম্মদ উল্লাহ (ইমাম, মিরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ), মাওলানা মোঃ আব্দুর রহমান (ইমাম, গোপালগঞ্জ জেলা মারকাজ মসজিদ), মুফতি হাফিজুর রহমান (ইমাম, গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদ), মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাজি (ইমাম, ঘাগর বন্দর মসজিদ, গোপালগঞ্জ), মাওলানা মোঃ মাহদী হাসান (মুহতামিম, কয়খা মাদ্রাসা গোপালগঞ্জ), মুফতি শুয়াইব ইবরাহিম (মুহাদ্দিস, ভবানীপুর মাদ্রাসা গোপালগঞ্জ)।

মুফতি আব্দুল্লাহ মোকাররম (মাও. আবদুর রহমান হাফেজ্জির ছেলে ও শিক্ষক মাখজানুল উলুম মাদ্রাসা, ময়মনসিংহ), মাওলানা আকতার হোসেন (খতিব, গাজীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ), মাওলানা নাসির আহমাদ (মুহতামিম, লক্ষীপাশা মাদ্রাসা, নড়াইল), মাওলানা ইসরাফিল হোসেন (ইমাম, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ), মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস (ইমাম, ডাকবাংলো মসজিদ কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ), মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া (মুহতামিম, ছোট দক্ষিণপাড়া, হস্তপল্লী শামসুল উলুম মাদ্রাসা, গোপালগঞ্জ) ও মাওলানা আবুল কালাম (মুহতামিম, কাজুলিয়া মাদ্রাসা গোপালগঞ্জ)।

এছাড়াও শেষ ধাপে তালিকায় যোগ হওয়া তিনজন আলেম হলেন- হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলীর ছেলে হাফেজ মাওলানা মুফতি শামীম আহমদ (মুহাদ্দিস, মাদরাসাতুল আবরার, মাতুয়াইল, ঢাকা), বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দসের ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হাসান যোবায়ের (শিক্ষক, ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকা) ও মাওলানা সাজিদুর রহমান (মুহতামিম, দারুল আরকাম মাদরাসা, বি.বাড়িয়া)। তন্মধ্যে মাওলানা আশরাফ আলী ও মাওলানা আবদুল কুদ্দুস ওলামা-মাশায়েখদের দলে আগেই ছিলেন। এবার তালিকায় তাদের সঙ্গে সন্তানরাও যোগ হলেন।

উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন হজযাত্রী হজপালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন।