কাবার দেয়াল ও গিলাফ ধরে দোয়া নিয়ে নতুন নির্দেশনা
অনেক হজ ও উমরা পালনকারী পবিত্র কাবার দেয়ালে বুক লাগিয়ে ও গিলাফ জড়িয়ে ধরে দোয়া করাকে জরুরি মনে করেন। এ জন্য অনেক কষ্টও করে থাকেন। বিষয়টি দিন দিন বাড়ছে। এমতাবস্থায় পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উমরা পালনকারীদের এমন কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছে, এসব কাজ ভুল। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, ‘মাকামে ইবরাহিম, কাবার দেয়াল এবং গিলাফ স্পর্শ করা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।’
হারামাইন পরিচালনা কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, ‘পবিত্র কাবা তাওয়াফের জন্য অনুমোদিত কাজ হলো- কালো পাথর (হাজরে আসওয়াদ) এবং রুকনে ইয়েমেনির দিকে হাত তুলে তাকবির বলা, অথবা সম্ভব হলে কালো পাথর স্পর্শ করা বা চুম্বন করা।’
এর আগে, মসজিদ পরিচালনা কর্তৃপক্ষ উমরা যাত্রীদের কাবা তাওয়াফের সময় শিষ্টাচার মেনে চলার, উচ্চস্বরে কথা না বলার এবং অপ্রয়োজনীয় যানজট সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানিয়েছিল।
সেই সঙ্গে মদিনার মসজিদে নববিতে আগত দর্শনার্থীদের এই মহান স্থানের পবিত্রতা সম্পর্কে সচেতন থাকার কথা উল্লেখ করে বলে, রওজা শরিফে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয় যা এই স্থানের সম্মান ও পবিত্রতার পরিপন্থী।
আর হাজরে আসওয়াদ চুম্বন সম্পর্কে হারামাইন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, উমরা যাত্রীদের এমন সময়ে কালো পাথর চুম্বন করার চেষ্টা করা উচিত; যখন কাবা প্রাঙ্গণে ভিড় না থাকে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, তাওয়াফ সম্পন্ন করার পর বিনা কারণে মাতাফে অবস্থান না করা।
ইসলামি স্কলাররা বলেন, কাবা ঘরের যে অংশ স্পর্শ করা নবী কারিম (সা.) কর্তৃক প্রমাণিত, কেবল সেই অংশ স্পর্শ করে তাওয়াফ এবং দোয়া করা।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, একবার হজরত মোয়াবিয়া (রা.) কাবা ঘরের তাওয়াফ করছিলেন। তিনি হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়েমেনি ছাড়া অন্য দুটি রোকন (কোন) স্পর্শ করেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)। তার এই আমল দেখে তাকে বললেন, আল্লাহ্র রাসুল (সা.) হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়েমেনি ছাড়া অন্য রোকন স্পর্শ করতেন না। হজরত মোয়াবিয়া (রা.) বললেন, আল্লাহ্র ঘরে কোনো কিছুই তো পরিত্যাজ্য নয়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, কিন্তু (মহান আল্লাহ বলেন,) ‘তোমাদের জন্য হজরত রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে-’ সূরা আহজাব: ২১। এ কথা শুনে হজরত মোয়াবিয়া (রা.) বললেন, তুমি ঠিকই বলেছ।’ -জামে তিরমিজি : ৪৩৮