‘কওমি মাদ্রাসাকে মূলধারায় আনার কথা উস্কানিমূলক’

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা

কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা

‘কওমি মাদ্রাসাকে মূলধারার শিক্ষায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে’, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দেওয়া এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অরাজনৈতিক সংগঠন কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ।

রোববার (১৫ অক্টোবর) গণমাধ্যমে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের মহাসচিব মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদীর পাঠানো প্রতিবাদ লিপিতে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদলিপিতে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত বৃহস্পতিবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) আয়োজিত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর আলোকে প্রণীত নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘একটা রূপান্তর সময়সাপেক্ষ বিষয়, তাই ইতোমধ্যে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে কওমি মাদ্রাসাকে মূলধারায় আনতে পারছি না, তবে ভবিষ্যতে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।’

আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, তার এই বক্তব্য আইনবিরোধী। কারণ, ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিলজামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীন ‘কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি)-এর সমমান প্রদান আইন, ২০১৮’ (২০১৮ সনের ৪৮ নং আইন)-এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘কওমি মাদ্রাসাগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে পরিচালিত হবে। মাদ্রাসা পরিচালনা ইত্যাদিতে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বজায় রাখবে।’

সংসদের পাশ হওয়া সিদ্ধান্ত ও আইন নিয়ে একজন মন্ত্রীর মুখে এমন বক্তব্য হতাশাজনক উল্লেখ করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে নিয়ে মন্ত্রীর এমন বিরোধিতাপূর্ণ মন্তব্য প্রমাণ করে কওমি মাদ্রাসা ও কওমি শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তার এ বক্তব্যের পর সারাদেশে নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে উদ্ভট ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি, সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

পীর সাহেব দেওনা আরো বলেন, বাংলাদেশ শতকরা ৯২ভাগ মুসলমানের দেশ। দ্বীনি শিক্ষা আমাদের ধর্মীয় অধিকার। ধর্মীয় শিক্ষায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মেনে নেবে না।

বিবৃতিতে তিনি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদও জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার নিরীহ ফিলিস্তিনি মুসলমানরা। নারী শিশু, বৃদ্ধসহ সকলকে নির্বিচারে হত্যা করছে জালেম এই সম্প্রদায়। তাদের রুখতে হলে ইসলামকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এ সময় তিনি, শাহাদাতবরণকারী মুসলিমদের রূহের মাগফিরাত ও চিকিৎসাধীনদের সুস্থতা কামনা করে বলেন, ফিলিস্তিনি মুসলিমদের এ ক্রান্তিকালে ওআইসিকে ভিন্ন ধারার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই সঙ্গে যেমনিভাবে ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সমর্থন না করে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছে ঠিক তেমনি তাদের এ ক্রান্তিকালে যথাসম্ভব পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে মানবিক সাহায্য, জরুরি ওষুধপত্র ও খাদ্য সামগ্রী পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি নেতৃবৃন্দ উদাত্ত আহ্বান জানান।

দেশের আপামর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলমানদের জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।