জাতিসংঘে কোরআন অবমাননার নিন্দায় মুসলিম নেতারা

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কাতারের আমির শেখ তামিম, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি

কাতারের আমির শেখ তামিম, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন চলছে। অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে বাকস্বাধীনতার অজুহাতে পবিত্র কোরআনের কপি পোড়ানোর নিন্দা জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ। তারা ধর্মীয় গ্রন্থ ও নিদর্শনের অবমাননা রোধ এবং এসবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তারা এ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামফোবিয়া ও ধর্মীয় বৈষম্য মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। তা এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে অনেক দেশ এমন ভয়ানক কাজে উৎসাহ দিয়ে আগুন নিয়ে খেলা অব্যাহত রেখেছে। যে মানসিকতা বাকস্বাধীনতার আড়ালে ইউরোপে পবিত্র কোরআনের ওপর জঘন্য হামলাকে উৎসাহিত করে, তা মূলত নিজের (ইউরোপ) হাতেই নিজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিচ্ছে।’

সম্প্রতি ফ্রান্সের স্কুলে হিজাব ও আবায়া পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সরকার। সেই সময় এর প্রতিবাদ জানান এরদোয়ান।

এদিকে বক্তব্যের সময় পবিত্র কোরআন হাতে নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামফোবিয়া ও সাংস্কৃতিক বর্ণবৈষম্য দেখা যাচ্ছে। সেখানে পবিত্র কোরআনের অবমাননা থেকে শুরু করে স্কুলে বোরকা নিষেধাজ্ঞাসহ অনেক শোচনীয় ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অশ্রদ্ধার আগুন দিয়ে কখনো ঐশ্বরিক সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না। পশ্চিমা বিশ্ব বাকস্বাধীনতার অজুহাত দেখিয়ে সবার মনোযোগ অন্য দিকে সরাতে চাচ্ছে।’

কাতারের আমির শেখ তামিম জাতিসংঘ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত অন্যের সম্মানিত বিষয়কে অসম্মান করাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মনে করা উচিত নয়। আমি মুসলিমদের বলব, কেউ পবিত্র কোরআন পোড়ালে বা অবমাননা করে উসকানির মাধ্যমে আমাদের বোকা বানালে তাদের মাধ্যমে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআন একটি সম্মানিত গ্রন্থ, বুদ্ধিহীন ব্যক্তি ছাড়া কেউ তা অবমাননা করতে পারে না।’

গত কয়েক মাসে সুইডেন ও ডেনমার্কে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন পোড়ানো প্রকাশ্যে ঘটেছে। কিন্তু এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশ দু’টির সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে আরব ও মুসলিম দেশগুলোতে। মুসলিম দেশগুলোর নেতারা বলছেন, কোরআন মাজিদ পোড়ানো মতপ্রকাশের কোনো মাধ্যম হতে পারে না।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায় মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগসহ মুসলিম দেশগুলো।

গত ১২ জুলাই ধর্মীয় বিদ্বেষ রোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) একটি প্রস্তাব পাস হয়। সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ধর্মীয় গ্রন্থের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করা হয়। তাতে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলা হয়।

ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোসহ বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশ কুরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছিল। এ নিয়ে ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের জরুরি বৈঠকও হয়।