বিশ্বে করোনায় মোট মৃত্যুর ১ শতাংশেরও কম দক্ষিণ এশিয়ায়
করোনা ভাইরাসচীনে শুরু হয়ে করোনাভাইরাস ইরান, ইউরোপ ঘুরে তাণ্ডব চালাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। একমাত্র নিউইয়র্ক শহরে যে পরিমাণ মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়েছে, তা অনেক দেশের চেয়েও বেশি। নিউইয়র্কে এখন পর্যন্ত ২,২৫০০০ জন করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে আর সেখানে প্রতিদিন শত শত নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস পরবর্তী আঘাত হানবে আফ্রিকায়। তাছাড়া, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে চলছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ সময়কাল। তবে, বিশ্বের অনেকগুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেও করোনার আচরণ, গতি, প্রকৃতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করতে পারেনি। নিশ্চিতভাবে এই নতুন, অচেনা ভাইরাসের ব্যাপারে স্থির পূর্বাভাস দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। বহু মানুষ সুস্থ হয়ে ফিরে এলেও তারা যে পুনরায় আক্রান্ত হবেনা, তেমন নিশ্চয়তাও পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
তথাপি গত পাঁচ মাসে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর প্রেক্ষাপটে কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার তরফে, যার মধ্যে বিশ্বব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে, যাতে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানা যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের মোট আক্রান্তের ১১ শতাংশ রোগী দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি সার্কভুক্ত দেশের। দক্ষিণ এশিয়ায় জনঘনত্ব অনেক বেশি এবং পৃথিবীর মাত্র ৩ শতাংশ ভূখণ্ড জুড়ে থাকা এই দেশগুলিতে থাকেন বিশ্বের ২১ শতাংশ মানুষ। তা সত্ত্বেও বিশ্বের মোট করোনা মৃত্যুর ১ শতাংশেরও কম ঘটেছে এই ভূখণ্ডে।
পাকিস্তানে মোট জনসংখ্যার ৯.৫৪ শতাংশ করোনা পজেটিভ। শ্রীলঙ্কায় পরিস্থিতি এতটাই ভাল যে সেখানে স্বাভাবিক জনজীবন শুরু হওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। এই দ্বীপরাষ্ট্রে লকডাউন অনেকটাই শিথিল করে দেওয়ার পথে। শ্রীলঙ্কায় এ পর্যন্ত ২৪৮ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা ৭। আরোগ্যের সংখ্যাও বেশ ভালো। ভারতে মারা গেছে ৫৩১ জন, আক্রান্ত ১৭২৬৫ জন আর বাংলাদেশে আক্রান্ত ২৪৬৫ এবং মৃত ৯১ জন আর সুস্থ হয়েছেন ৭৫ জন।
কিন্তু সোমবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০১ জন আর আক্রান্তের সংখ্যা হয় ২৯৪৮ জন। ভারতেও ক্রমবর্ধমান হার লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে এবং পাকিস্তানে পাঞ্জাব প্রদেশে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে করোনা আক্রান্ত রোগী কম পাওয়ার ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের দেশগুলোতে কম নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। টেস্ট বাড়লে আরো আক্রান্ত মানুষের সন্ধান পাওয়ার আশঙ্কাও করেছেন তারা। তবে জনবহুল ও ঘনত্বপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধের বিষয়টি যত কড়াকড়ি করা যাবে, ততই করোনার বিস্তার ও ক্ষয়ক্ষতি ঠেকিয়ে রাখা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তা না হলে ক্রমবর্ধমান করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু আরো বাড়তে পারে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।