যুক্তরাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের ১১ দিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ার করোনা শনাক্ত করা হয়। কিন্তু এই দুইটি দেশের অবস্থা এখন বিপরীত। যেখানে যুক্তরাজ্যে করোনার বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া সফলভাবে করোনার বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোধে দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্য থেকে অনুকরণ করতে পারে আক্রান্ত দেশগুলো।
দক্ষিণ কোরিয়া সংক্রমণ রোধে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করে— ব্যাপক হারে টেস্টিং করা, রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং ও আইসোলেশন/সঙ্গরোধের ব্যবস্থা জোরদার।
করোনার সংক্রমণের শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণ কোরিয়া স্টেটিং কিট তৈরিতে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেয়। এখন দেশটিতে প্রতিদিন দশ লাখ টেস্টিং কিট তৈরি হচ্ছে।
ব্যাপক হারে টেস্টিং
দক্ষিণ কোরিয়ায় যখন করোনার বিস্তার শুরু হতে থাকে তখন কীভাবে এর সংক্রমণ ঠেকানো তার কাজ শুরু করে দিয়েছিল। অর্থাৎ উন্নত দেশগুলো যখন ভাবছিল সংক্রমণ খুব বেশি বিস্তার লাভ করবে না তখন দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের প্রস্তুত করছিল।
এমনকি যুক্তরাজ্য র্যাপিড টেস্টিং করবে কি না এমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল, সেখানে ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ দক্ষিণ কোরিয়ায় মাত্র ২৭ জন আক্রান্ত হয়েছিল। আর তখনই আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর স্টেস্টিং করে ফেলেছিল কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়া একমাত্র দেশ যেখানে ব্যাপকভাবে স্টেটিং চালাতে স্টেস্টিং বুথ খোলাসহ ফ্রি স্টেস্টিং কার্যক্রম শুরু করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সোসাইটি ফর ল্যাবরেটরির মেডিসিন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক পরিচালক ডাঃ লি হিউক মিন বলেন, যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্র তাদের সুবর্ণ সময়টাকে হারিয়ে ফেলেছে। কারণ তারা অপেক্ষা করছিল সংক্রমণ বিস্তারের। তারপর তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করে।
রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং
লকডাউন নয় বরং রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংয়ের দিকে জোর দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। একইসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া লকডাউনের দিকে না যেয়ে যারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং অর্থাৎ আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা সবাইকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
করোনা রোধে বিশেষ অ্যাপ
করোনার বিস্তার রোধে বিশেষ অ্যাপ চালু করে দক্ষিণ কোরিয়া। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে সেসব রোগীরা বাইরে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ করেছেন। অর্থাৎ সঙ্গরোধে যাওয়া ব্যক্তিদের এই অ্যাপ ডাউনলোড বাধ্যমূলক ছিল। এই অ্যাপের মাধ্যমে তাদের চলাচল ও গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার
শুরু থেকেই মাস্ক ব্যবহারে কড়াকড়ি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশটি। এমনকি এর উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং সকলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিটি দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংরক্ষণ করা হয়।
আরও পড়ুন- ক্লোরোকুইন ওষুধে কি করোনা নিরাময় সম্ভব?
গরমে কমবে করোনার সংক্রমণ, দাবি মার্কিন গবেষকদের
করোনার চিকিৎসায় চার ওষুধ নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বন্যপ্রাণীর অবাধ বাণিজ্য, ভয়াবহ মহামারির দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব
নীল আকাশ বলে দিচ্ছে, ভারত কতটা দূষণমুক্ত
পৃথিবীর যেসব অঞ্চল এখনো করোনামুক্ত
ক্ষমতার অন্দরমহলে করোনার আধিপত্য!