যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত্র লোকের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। ভাইরাসটিতে সংক্রামিত হয়ে মারা গেছে ৮ হাজারের বেশি মানুষ।
বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে গত ৬ মার্চ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল এক লাখ, অর্থাৎ মাত্র ১২ দিনের মধ্যে ভাইরাসটিতে আরও এক লাখ মানুষ সংক্রামিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ গণনা থেকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য কিছু তারতম্য রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার সবশেষ তথ্য অনুযায়ী এক লাখ ৮৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, মৃতের সংখ্যা সাড়ে সাত হাজারের বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জন হপকিন্স দিনের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাদরে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশ করায় গণনায় এই তারতম্য দেখা যায়।
গত ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে ভাইরাসটি সর্বপ্রথম শনাক্ত হয় চীনের হুবেই প্রদেশে। বর্তমানে দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা একদমই নিচে। ইতিমধ্যেই চীনের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা স্বাস্থ্য কর্মীদের আনুষ্ঠিকভাবে উহান থেকে বিদায় নিতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় প্রাণহানি হয়েছে মোট ৩ হাজার ২২৬ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৭ জন মানুষ।
চীনে করোনার ভয়াবহতা শেষ হলেও বাড়ছে ইউরোপের দেশ ইতালিতে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা দেশটির নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে জানায় ইতালিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫০৬ জনে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ হাজার ৫০৩।
বর্তমানে দেশটি লকডাউন অবস্থায় আছে। সকল শিক্ষা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যান চলাচলসহ সব কিছু বন্ধ রাখা হয়েছে। খোলা রয়েছে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও ফার্মেসি। এছাড়াও লকডাউন অমান্য করে করে বের হলে জরিমানা করা হচ্ছে। এর আগেই করোনার প্রভাব ঠেকাতে সরকার জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও ফুটবল ম্যাচসহ সব ধরনের স্পোর্টস ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে।
লেবাননের উত্তরে দুটি এলাকায় এবং রাজধানীর দক্ষিণের একটি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক হাজার ৬৪৫ জনে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বৈরুতের উত্তরে অবস্থিত মায়েসরাহ গ্রামে ইসরায়েলি হামলায় ৯ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে। উত্তর লেবাননের বাতরুন শহরের কাছে দেইর বেলাতে দুইজন নিহত, চারজন আহত এবং এক অজ্ঞাত ব্যক্তির "শরীরের অঙ্গ" উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে বৈরুতের দক্ষিণে বারজায় হামলায় চারজন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছে।
ইসরায়েল দক্ষিণাঞ্চলীয় নাবাতিহ শহরেও আঘাত হানে, যেখানে আটজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধারকারীরা এ হামলায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে কাজ করছে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।
এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৫ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি লেবানিজ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষ।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে মোট ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি সেনারা ট্যাংক নিয়ে জাবালিয়া এলাকার আরো ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার (১৩ অক্টোবর) গাজার দায়িত্বরত চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনারা আকাশপথে ও স্থলপথে গাজায় হামলা করলে শনিবার সন্ধ্যায় ১৯ জন মারা যান। এরপর শনিবার দিনগত রাতে হামলা চালালে আরো অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
জানা যায়, ইসরায়েলি সেনারা ট্যাংক নিয়ে গাজার জাবালিয়া এলাকার আরো ভেতরের দিকে আগাচ্ছে এবং সেইসঙ্গে তারা যুদ্ধ বিমানেরও হামলা করছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় জাবালিয়া এলাকায় এক সপ্তাহে অন্তত ১শ ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, হামলার কারণে এ এলাকায় পোলিও ভ্যাকসিনেশনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, শনিবার গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে হামাসের ২০ সদস্য নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনারা যুদ্ধ বিমান দিয়ে হামলার পাশাপাশি স্থলপথেও হামলা করেছে।
গাজাবাসী এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় এখন কোথাও নিরাপদ এলাকা বলতে কিছু নেই। সেখানে খাবার নেই, পানি নেই, জ্বালানি নেই এবং সেইসঙ্গে ওষুধসামগ্রীও নেই।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামাস হামলা করলে ১ হাজার ২শ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয় এবং ২শ ৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের হামলায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত ৯৫ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানের পূর্ব ওয়ার্দাক প্রদেশ এবং পশ্চিম হেরাত প্রদেশে দুটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৬ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আহত হয়েছে আরও ৮ জন।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার (১৩ অক্টোবর) এ তথ্য জানায় চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।
প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ ইউসুফ আসরার বলেছেন, রাজধানী কাবুলকে দক্ষিণ কান্দাহার প্রদেশের সঙ্গে সংযোগকারী মহাসড়কের পাশে ওয়ার্দাকের সায়দাবাদ জেলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি গাড়ির কচ্ছপ উল্টে গেলে নারী ও শিশুসহ তিনজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন।
আসরার মতে, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অপরদিকে প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে হেরাত প্রদেশের ইসলাম কালা হাইওয়েতে ঘটে যাওয়া একই ধরনের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত এবং একজন আহত হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশের মতে, আফগানিস্তানে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই খারাপ রাস্তার অবস্থা, চালকদের বেপরোয়াতা বা ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে হয়ে থাকে।
ভারতের মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, শনিবার রাতে বাবা সিদ্দিকির ছেলে পূর্ব বান্দ্রার বিধায়ক জিশান সিদ্দিকির অফিসের কাছে বন্দুকধারীরা ছয়টি গুলি চালায়। এরমধ্যে চারটি গুলি লাগে ৬৬ বছর বয়সি সাবেক এই মন্ত্রীকে। এরপর তাকে দ্রুত লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, বাবা সিদ্দিককে গুলি করার সঙ্গে তিন ব্যক্তি জড়িত। দুজনকে আটক করা হয়েছে। তৃতীয় ব্যক্তি পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বলেন, হাসপাতালের পুলিশ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। খবর পেয়েছি তিনি (সিদ্দিকি) মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন উত্তরপ্রদেশের এবং একজন হরিয়ানার। আর একজন পলাতক রয়েছে। আমি পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
সিদ্দিক মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা পশ্চিম নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের অধীনে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য ও বেসামরিক সেবা সরবরাহ এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।