মেয়েদের অপহরণ ও স্ত্রীকে হুমকি দিয়েছিল দুবাইয়ের শাসক

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম, ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম, ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ের ধনকুবের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম নিজের মেয়েদের অপহরণ (জোর করে তুলে নেওয়া), নির্যাতন ও স্ত্রীকে ভয় দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটেনের উচ্চ আদালতে দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুমের সাবেক স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল-হুসেনের করা অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে এগুলোকে সত্য বলে রায় দিয়েছে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট।

বিজ্ঞাপন

গত বছর দুবাই থেকে দুই সন্তান নিয়ে পালিয়ে আসেন প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল-হুসেন। আর আট মাস আগে ব্রিটেনের আদালতে দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। ওই সময় তিনি তার বন্ধুদের জানান, তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।

তবে রায়টি জনসম্মুখে না জানানোর জন্য আপিল করেছিল দুবাইয়ের শাসক। কিন্তু জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ব্রিটিশ আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দেয় এবং দুবাইয়ের শাসক আদালতের প্রতি সৎ ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়।

আদালতের রায়ের পর এক বিবৃতিতে শেখ মোহাম্মদ জানান, সরকার প্রধান হিসেবে ব্যস্ত থাকায় আমি আদালতের তথ্য অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারিনি। আর আদালত একপেশে রায় দিয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, মামলাটি খুবই ব্যক্তিগত বিষয়। আমি মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ করে বলছি তারা যেন আমার সন্তানদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে এবং তাদের যুক্তরাজ্যের জীবনে অনুপ্রবেশ না করে।

বিভিন্ন সময়ে দেওয়া সাক্ষীর বিবৃতি শোনার পরে বিচারকরা রায়ে বলেন, শেখ মোহাম্মদ কন্যাদেরকে অপহরণ ও তাদেরকে জোর করে দুবাই ফেরত নিয়ে যেতে বাধ্য করে।

২০০০ সালে শেখ মোহাম্মদের মেয়ে শেয়খা শামসা যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যায়। তবে শেখ মোহাম্মদের নির্দেশে গুপ্তচররা তাকে ক্যামব্রিজ থেকে অপহরণ করে এবং জোর করে দুবাইতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। যেখানে এখনো তিনি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। অপহরণের মামলাটি তদন্তের জন্য ক্যামব্রিজ পুলিশ দুবাইয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করা হয়।

এদিকে শেখ মোহাম্মদের আরেক কন্যা শেয়খা লতিফা ২০০২ ও ২০১৮ সালে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করে। কিন্তু দুবারই সে ব্যর্থ হয়। প্রথমবার পালাতে ব্যর্থ হলে তাকে তিন বছর জেলে রাখা হয়। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় তাকে ভারতের উপকূল থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং জোর করে দুবাইয়ে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তখন থেকে লতিফা গৃহবন্দী রয়েছেন।

ব্রিটেনের বিচারক লতিফার ওপর শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছে। লতিফার একটি ভিডিও দ্বারা নির্যাতনের বিষয়টি খুঁজে পায় আদালত। এছাড়া শেখ মোহাম্মদ এমন একটি শাসনব্যবস্থা বজায় রেখে চলেছেন যার মাধ্যমে সে তার দুই কন্যার স্বাধীনতা থেকে তাদের বঞ্চিত রেখেছেন বলেও আবিষ্কার করেছেন বিচারকরা।

২০০৪ সালে ওমানের রাজকন্যা প্রিন্সেস হায়াকে বিয়ে করেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ। আর তিনি ছিলেন শেখ মোহাম্মদের ষষ্ঠ স্ত্রী এবং তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।