আইনি চ্যালেঞ্জে এবিসি'র পরাজয়

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সিডনিতে পুলিশি অভিযানের বিরুদ্ধে করা আইনি চ্যালেঞ্জে হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়ান পাবলিক ব্রডকাস্টিং (এবিসি)। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আদালত পুলিশের অভিযানটিকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। যার ফলে আদালতে আর কোনো আইনি লড়াই চালাতে পারবে না এবিসি।

রায়ে আদালত আরও জানায়, প্রতিবেদনটির ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা যেসব সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়েছিল তা গ্রহণযোগ্য নয়।

বিজ্ঞাপন

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এবিসি'র পরিচালক ডেভিড এন্ডারসন জানান, আদালতের সিদ্ধান্তটি ছিল হতাশাজনক। এই অভিযানগুলো সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন না করানোর প্রচেষ্টা মাত্র।

এন্ডারসন আরও জানান, রায়টি ছিল জনস্বার্থ সাংবাদিকতার জন্য একটি আঘাত। আদালতের সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সুরক্ষা আইন নিয়ে একটি গুরুতর সমস্যা তুলে ধরেছে। আর এতে বুঝা যায় পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অধিক গোপনীয় আইন রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়।

বিজ্ঞাপন

আদালতে মামলাটির রায়ে ক্ষোভ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি, দ্যা মিডিয়া ও ইন্টারটেইমেন্ট ও আর্টস জোটরা। তাদের থেকে বলা হয়, আদালতের এই রায় জনগণের জানার জন্য হুমকি স্বরূপ।

আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়া সরকার থেকে জানানো হয়ে আসছে, তারা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পেছনে কাজ করছে। কিন্তু কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলে জানানো হচ্ছে।

২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তারক্ষীদের দ্বারা আফগানিস্তানে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এবিসি। প্রতিবেদনটিতে মূলত দেশটির সেনাবাহিনী থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে টেলিভিশন চ্যানেলটিতে অভিযান চালায় পুলিশ। সরকারের গোপন নথি ফাঁস করার অভিযোগে এ কার্যক্রম পরিচালিত করা হয়। ওই অভিযানে পুলিশ এবিসি'র অফিস থেকে হাজার খানেক নথি জব্দ করে।

অভিযান নিয়ে দেশটির পুলিশ জানায়, প্রতিবেদনটিতে যে তথ্য উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছিল তা জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।

আর ২০১৮ সালে এবিসি'র রিপোর্টার আনিকা স্টেমথার্স্টের বাড়িতেও পুলিশ অভিযান চালায়। অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা দেশটির নাগরিকের ওপর গুপ্তচর করার অভিযোগ করে প্রতিবেদন করে আনিকা স্টেমথার্স্টের। যার প্রেক্ষিতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।

অস্ট্রেলিয়া সরকারের এসব অভিযানের পর থেকে দেশটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। যার ফলে পুরো দেশ জুড়ে ক্ষোভ দেখা যায়।

ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া ১৭৭টি দেশের মধ্যে ২১তম স্থানে রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আইনি কারণে দেশটিতে অনুসন্ধানীমূলক সাংবাদিকতার পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।