হংকংয়ে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের দমাতে নতুন আইন জারি করেছে দেশটির সরকার। এখন থেকে বিক্ষোভের সময় কোনো অবস্থাতেই মুখোশ পরিধান করে আন্দোলন করা যাবে না।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) এই সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেন দেশটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যারি লাম।
তিনি বলেন, মুখোশধারীদের আড়ালে বিদেশিদের হাত রয়েছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে হংকংকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আন্দোলনের নামে এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম মেনে নেওয়া যায় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মুখোশধারীদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আন্দোলনকারীরা এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই আদেশকে তারা সাম্রাজ্যবাদী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। প্রশাসনের চাপ থাকলেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টার কমপক্ষে আরও ১১৫ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া এসময় আহত হয়েছেন আরও ৪৮৭ জন। এ নিয়ে আহতের সংখ্যা ছাড়ালো এক লাখ ২৮২ জনে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টায় আরও ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ৪৮৭ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উত্তর গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন। ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য ইসরায়েলি বাহিনী উদ্ধারকারী দলকে সেখানে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে। এতে আরও মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈরুতের রফিক হারিরি ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলি হামলায় এক শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৫৭ জন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪২ হাজার ৭১৮ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ২৮২ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। বন্দি রয়েছে ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নাগরিক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড’ (THAAD) ইসরায়েলে অবশেষে মোতায়েন করা হয়েছে। সপ্তাহখানেক জানানো হয়েছিল, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে ‘থাড’ সরবরাহ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম ফার্স্ট পোস্ট এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ইসরায়েলে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।
১ অক্টোবর ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি, বিমান বাহিনীর ঘাঁটি এবং দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর ভবন লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর ঘাঁটির ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয় বলে ইসরায়েল স্বীকার করে।
এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে এবং সে হামলার জবাবে ইরানের ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হাত থেকে রক্ষা করতে এ ‘থাড’ সরবরাহ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
‘থাড’ এবং এর বৈশিষ্ট্য
ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত নাম- ‘থাড’ (THAAD)। এর পুরো নাম- ‘টার্মিনাল হাই-অল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স’।
এতে অত্যাধুনিক রাডার ব্যবহার করা হয়। এতে রয়েছে, শত্রুপক্ষের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট বা যুদ্ধবিমান ধ্বংসের জন্য শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র। ‘থাড’ নিজের ১শ ৫০ থেকে ২শ কিলোমিটারের মধ্যে আসা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিমেষেই ধ্বংস করে দিতে পারে। এর সক্ষমতা বলা চলে একেবারে নিখুঁত।
‘থাড’ ভূমি থেকে ভূমি, ভূমি থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে আকাশে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া ধ্বংস করে দিতে পারে। এটি মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনস তৈরি করে।
সাংবাদিকেরা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের কাছে জানতে চান, ‘থাড’ কাজ শুরু করেছে কি না। এর জবাবে লয়েড বলেন, খুব দ্রুত এটি স্থাপনসহ প্রত্যাশিতভাবেই কাজ করতে সক্ষম ‘থাড’।
সপ্তাহখানেক আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েলে ‘থাড’ স্থাপন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা করবে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। মার্কিনিদের পক্ষ থেকে এর কোনো পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে এবং এ হামলার দায় কেউ স্বীকারও করেনি।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) লেবাননের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল-মাহেদীন-এর বরাত দিয়ে ইরানের বার্তাসংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (ইরনা) এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে লেবাননের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল-মাহেদীন জানায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারাব আল-জিরে অবস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে আকাশপথে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাছাড়া এ হামলার দায় কেউ স্বীকারও করেনি।
খবরে আরো বলা হয়, সিরিয়ার কোনিকো গ্যাস ফিল্ডে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ঘাঁটি থেকে প্রায়ই হাওজিয়া সকর এবং আল-জাফরা গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে, সিরিয়ার সরকার প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে যে, মার্কিন সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে অবস্থিত তেল কেন্দ্রগুলোতে লুটপাট চালিয়ে থাকে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এ এলাকা থেকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিতাড়িত হওয়ার পর মার্কিন সেনাবাহিনী একটি ঘাঁটি তৈরি করে সেখানে অবস্থান করে আসছে।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালের আবহাওয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে নিম্নচাপ হিসেবে রয়েছে ডানা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাগরদ্বীপ উপকূল থেকে বর্তমানে নিম্নচাপের দূরত্ব মাত্র ৭৭০ কিলোমিটার। আগামীকাল বুধবারই (২৩ অক্টোবর) জন্ম নেবে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’। আর আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সেটি আঘাত হানতে পারে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) পূর্বাভাসে জানিয়েছে, নিম্নচাপটি ক্রমশ পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। আরও ঘনীভূত হয়ে বুধবার সকালেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপটি। বুধবার দুপুরে এটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করতে পারে। ফলে উত্তাল থাকবে সমুদ্র। এখনও পর্যন্ত নিম্নচাপটির গতিপ্রকৃতি দেখে আবহাওয়াবিদদের অনুমান, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী এবং এই রাজ্যের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী কোনও অংশ দিয়ে স্থলভাগে ঢুকতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। ‘ল্যান্ডফলের’ সময় এটির সর্বাধিক গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
বঙ্গোপসাগরের একাংশ এখন থেকেই উত্তাল হতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার থেকেই পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার সমুদ্র আরও উত্তাল হবে। বাংলা এবং ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সমুদ্র উত্তাল থাকবে। ইতোমধ্যে দুই রাজ্যের উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দুর্যোগের প্রভাব পড়তে পারে ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা ও বাঁকুড়াসহ আট জেলায়।
এদিকে আগামীকালের (বুধবার) বাংলাদেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।