সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উচ্ছেদ অভিযানের শীর্ষ নেতা আহমেদ আল শারা দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানার বরাতে এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাশার ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যান্য সামরিক গোষ্ঠীর কমান্ডার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বুধবার এক বৈঠকে শারা-কে অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। সিরীয় বিপ্লবের বিজয়’ নামের সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শারা নিজেও। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করার জন্য মন্ত্রিসভা গঠনের দায়িত্বও দেওয়া হয় এই নেতাকে।
সামরিক কর্মকর্তা হাসান আবদেল ঘানির বরাতে সানা এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘সিরিয়ায় আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবে শারা। নির্বাচনের ভিত্তিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গণে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান হিসেবে সিরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনি।’
এছাড়া বাশার আল আসাদের পতনে যেসব সশস্ত্র গোষ্ঠী অংশ নিয়েছিল, সেসব বিলোপ এবং ওই গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বৈঠকে। বিগত সরকারের পতনের পর রীতিমত ভেঙে পড়েছে সিরিয়ার সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে শারা বলেন, সিরিয়ার সরকার ব্যবস্থায় বর্তমানে যে শূন্যতা চলছে, তা বৈধ এবং আইনানুগভাবে পূরণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, অন্তবর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সিরিয়ায় একটি যথাযথ সরকার আসার পথকে সুগম করা এবং সে জন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে আমূল সংস্কারের প্রয়োজন।
সংবিধান প্রণয়ন প্রসঙ্গে শারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সিরিয়ার জন্য নতুন সংবিধান গ্রহণ করা হবে এবং এই সংবিধান লিখতেই প্রায় লাগবে ৩ বছর সময় লাগতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও কয়েকটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অভিযানে পতন ঘটে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের। তখন সপরিবারে দেশ থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন আসাদ। আহমেদ আল শারা ছিলেন সেই অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামসের প্রধান সংগঠক এবং শীর্ষ কমান্ডার।