আরজিকর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বহুল আলোচিত আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও আন্দোলনকারীরা ফাঁসির রায়ের আশা করলেও বিচারক অনির্বাণ দাস সোমবার (২০ জানুয়ারি) আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে সঞ্জয় রায়কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি নিহত তরুণী চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয় রায়কে তোলা হলে, আরজিকর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দাবি করেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। কর্মরত চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুন-কাণ্ডে তিনি জড়িত নয় বলে দাবি করেন সঞ্জয় রায়।
শাস্তি ঘোষণার দিন সঞ্জয় রায় আদালতে হাজির হয়ে বলেন, ‘আমি খুন করিনি। ধর্ষণও করিনি। আমায় মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’ বিচারকের উদ্দেশে সঞ্জয় রায়কে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি সব দেখতে পাচ্ছেন। আমি নিরপরাধ। এমনকী আমায় অত্যাচার করা হয়েছে।’
২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু করেন চিকিৎসক এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা।
এই মামলার দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘‘ধর্ষণকালীন আঘাতে মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার।’’ তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ ঘটনা নয়।
দুপুর পৌনে তিনটার দিকে রায় ঘোষণার আগে প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের উদ্দেশে বিচারক বলেন, আগের দিনই বলেছিলাম, ধর্ষণের জন্য আপনার (সঞ্জয়) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। ধর্ষণের সময় আঘাতে মৃত্যু হলে যাবজ্জীবন এবং মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। খুনের দায়ে আপনার শাস্তি হতে পারে। এগুলো সব আপনাকে জানানো হয়েছে। আপনার বক্তব্য থাকলে বলুন।
এসময় সঞ্জয় বলেন, আমি খুন বা অন্য কাজ কিছুই করিনি। আমি কোনওটাই করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি আগের দিনও বলেছি। যেটা আমি শুনেছি, এত কিছু নষ্ট হয়েছে। আমি জানতাম না। আগের দিনই বলেছিলাম, আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। সেটা নষ্ট হয়নি। আমি নির্দোষ। আপনাকে আগেও বলেছি যে কী ভাবে আমাকে মারধর করা হয়েছে, যার যা ইচ্ছে করেছে। অত্যাচার করা হয়েছে, সাইন করানো হয়েছে। যেখানে বলেছে সাইন করেছি।