উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নৃশংস হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজন চিকিৎসকসহ অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতালের বেশ কয়েকটি বিভাগে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালের একটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন চিকিৎসা কর্মীসহ অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
এদিকে,গাজা শহরের শেখ রাদওয়ানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল ডিফেন্স।
জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দরে অবস্থানকালীন ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিমান দ্বারা দেশটিতে বোমাবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগ জানিয়েছে, গাজা-ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫০০ জন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৫০০ জন দু’বার আহত হয়েছে। আহত সৈন্যদের ৩৭ শতাংশ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আঘাতে ভুগছেন, যাদের বেশিরভাগই হাড়ে আঘাত পেয়েছে। এছাড়া, প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন মানসিক রোগে ভুগছেন।
গাজায় বর্বর হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৫ হাজার ৪৩৬ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৮ হাজার ৩৮ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। বন্দি রয়েছে ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নাগরিক।