জিম্বাবুয়েতে প্রথমবারের মতো মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলুপ্ত করার আইন অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির এমারসন মানানগাগওয়া। গতকাল ৩১ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের অনুমাদনের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়েছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জিম্বাবুয়েরতে বিলুপ্ত করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ডের বিধান। তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে আইনটি কার্যকর হয়ে যায়। তার এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে অধিকারবিষয়ক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, 'এ অঞ্চলে যারা মৃত্যুদণ্ডের বিলুপ্তি চাচ্ছিলেন তাদের জন্য এটি একটি আশার আলো।'
তবে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার বিষয়টিতে সমালোচনাও করেছে মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাটি।
গত ডিসেম্বরের শুরুতে জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্টে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের জন্য ভোট হয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের অনুমোদনে এ আইন তাৎক্ষণিক কার্যকর হয়। দেশটিতে সর্বশেষ ২০০৫ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এক ব্যক্তির দণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর কাউকে আর ফাঁসির মঞ্চে না নেয়া হলেও হত্যার মতো অপরাধের জন্য দেশটির আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আসছিল।
অ্যামনেস্টির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়েতে ৬০ জনের মাথার ওপর ঝুলছিল মৃত্যুদণ্ড। এখন তাদের নতুন দণ্ড দেওয়া হবে। বিচারকদের এই অপরাধীদের অপরাধের ধরন বিবেচনা করে নতুন দণ্ড দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু হয়।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমারসন মানঙ্গাগওয়া নিজেও সর্বোচ্চ শাস্তির বিরুদ্ধে। কারণ ১৯৬০ সালে দেশটির স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বোমা হামলা চালিয়ে একটি ট্রেন উড়িয়ে দেয়ার মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে সেটি পরিবর্তন করে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, আফ্রিকার ২৪টি সহ বিশ্বব্যাপী ১১৩টি দেশে মৃত্যুদণ্ডের বিধান পুরোপুরি বিলুপ্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে চীন, ইরান, সৌদি আরব, সোমালিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে।