সাবান-পানির অভাব: চুল কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মেয়েরা

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: চুল কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মেয়েরা

ছবি: চুল কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মেয়েরা

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় সাবান, পানির অভাবে সেখানকার মেয়েরা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পারছেন না। সে কারণে মাথার চুল কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

এমনকী সেখানে আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণ সহায়তা আসতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এ এলাকার অবস্থা চরম আকার ধারণ করেছে। এ কারণে এলাকায় চুলকানি, চর্মরোগসহ নানান ধরনের রোগ বেড়ে গিয়ে সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছেন মানুষজন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ আগস্ট) ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে।

খবরে বলা হয়, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ লোবনা আল-আজাইজা বলেন, গাজার মেয়েরা তাকে জানিয়েছেন, মাথা চুল আঁচড়াবার চিরুনিও তাদের নেই।

আল-আজাইজা বলেন, ১০ মাস ধরে গাজা এলাকা ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দখল করে রেখেছে। তারমানে শুধু চিরুনিই নয়, সেখানে সাবান নেই, শ্যাম্পু নেই। মেয়েদের স্যানেটারি পণ্যসহ ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার সামগ্রীরও অভাব ঘটেছে সেখানে।

তিনি বলেন, বর্জ্য এবং পয়ঃপ্রণালী অপসারণের ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। সে কারণে চুলকানি, ফাঙ্গাসজনিত রোগসহ চর্মরোগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

রোগের ভয়াবহতা উল্লেখ করে লোবনা আল-আজাইজা বলেন, আমরা অনেকদিন ধরেই দেখছি, মানুষের শরীরে র‌্যাশ উঠছে। চর্মরোগ বেড়েছে। শরণার্থী শিবিরে অতিরিক্ত লোকের বসবাসের কারণে সেখানকার মানুষেরা পানির অভাবে গোসল পর্যন্ত করতে পারছে না।

ইসরায়েলি হামলা গাজাকে উত্তর আর দক্ষিণে ভাগ করে ফেলেছে। এর আগে আজাইজা দক্ষিণ গাজার বেইট লাহিয়ার কামাল আদ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন। অন্যান্য চিকিৎসকদের মতো আজাইজা নিজের বাড়ি ধ্বংসের পরেও পায়ে হেঁটে গিয়ে শরণার্থীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

তিনি একটি তাবুতে গাজার শিশুদের চিকিৎসা সেবা শুরু করেছেন নিজের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার অনুশীলনের তাগিদেই।

আজাইজা জানিয়েছেন, ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার একেবারেই বাইরে চলে গেছে। এমনকী আগুনে পুড়ে গেলে যে মলম লাগাতে হয়, তার দাম এখন ২শ শেকেল (৫৩ মার্কিন ডলার)।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী রাফাহ সীমান্ত এলাকা নিজেদের দখলে রাখায় মিশর সীমান্ত অতিক্রম করে যে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা আসতো, তা এখন সীমিত পর্যায়ে চলে গেছে। তবে ইসরায়েল এ দাবির সত্যতা অস্বীকার করেছে। দেশটি জানিয়েছে, উপত্যকার ভেতরে জাতিসংঘসহ অন্যান্যরা ত্রাণ সহায়তার দায়িত্বে রয়েছে।

আজাইজার মতে, এসব সমস্যার আপাতত কোনো সমাধান তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। গাজার ২৩ লাখ লোকসংখ্যা বেশির ভাগ মানুষেরই ঘরবাড়ি ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।