তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে টাইফুন 'গেইমি'। এতে এখন পর্যন্ত তিনজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। শতাধিক আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা।
এছাড়া বাতিল করা হয়েছে প্রায় সব অভ্যন্তরীণ এবং দুইশোর বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘণ্টায় প্রায় ২৪০ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) পর্যন্ত বেগে ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে টাইফুন গেইমি তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়েছে। প্রবল শক্তিশালী এই টাইফুনটি দ্বীপ ভূখণ্ডটির হুয়ালিয়েন শহরের কাছে আঘাত হানে। গেইমি গত আট বছরের মধ্যে দ্বীপটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাইওয়ানে আঘাত হানার আগে, গেইমির প্রভাবে ফিলিপাইনে ব্যাপক বৃষ্টিতে আটজন মারা গেছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, শক্তিশালী এই টাইফুন ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে গত এপ্রিলে বড় ভূমিকম্পে অস্থিতিশীল হয়ে পড়া পাহাড়ের পাদদেশে।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধির পর অতীতের স্মৃতি বহনকারী এই সংযোগ সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে এ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার বক্তব্য হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ফের একত্রীকরণ সম্ভব নয়।
এদিকে, সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার পর সীমান্তের দক্ষিণ কোরিয়ার প্রান্তের সড়ক থেকে সে দেশের সেনাসদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে সতর্ক বার্তা দেয়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী সড়ক ও রেলপথের উত্তর কোরিয়ার অংশ ডিনামাইট ও ল্যান্ডমাইন দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে সে দেশের সেনাবাহিনী। এতে করে একসময়ের দুই দেশের মধ্যে স্মৃতিবহনকারী ঐহিত্য নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। এ ছাড়াও অনেক আগে থেকেই দুই কোরিয়ার একত্রীকরণের সম্ভাবনা আপাতত আর রইলো না।
সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়া অভিযোগ করে বলেছে, অতীতের চুক্তি ভঙ্গ করে সড়ক ও রেলপথ ধ্বংস করেছে উত্তর কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার আগে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী সীমান্তের তাদের অংশে সোমবার অনেক ট্রাক জড়ো করে। এছাড়া দুই দেশের সংযোগ অংশ ব্যারিকেড দিয়ে লাইন্ড মাইন স্থাপন করে।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে তা উড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় সীমান্তের দুই অংশে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অবস্থান করে এবং দক্ষিণ কোরিয়া সেনাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকতে দেখা যায়।
সপ্তাহখানেক আগে থেকে দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করার পর উত্তর কোরিয়া সীমান্ত সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সীমান্ত সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার পর অনেকদিন ধরে চলে আসা দুই কোরিয়া পুনর্ত্রীকরণের আলোচনা এবং এ বিষয়ে যে চুক্তি ছিল, তা ভঙ্গ করলো উত্তর কোরিয়া।
এদিকে, এ ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার পুনর্ত্রীকরণবিষয়ক মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ার প্রতি নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে, ‘এটি পুরোপুরি অস্বাভাবিক ঘটনা’!
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কু বিয়ং-সাম এক প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, এ ঘটনা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। উত্তর কোরিয়া বার বার এ ধরনের উগ্র আচরণ করে আসছে।
উত্তর কোরিয়া অংশের সংযোগ সড়ক ও রেলপথ উড়িয়ে দেওয়ার পর দক্ষিণ অংশের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর ধারণ করা এক ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, সংযোগ সড়কে বিস্ফোরণ ঘটে এবং এর ফলে সে এলাকায় ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রান্তের দিকে একটি নোটিশ লেখা দেখা যায়। তাতে লেখা রয়েছে- ‘গুডবাই’!
গাজা, ইরান ও ইরান সমর্থিত লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধির পর রকেট হামলা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধী অস্ত্রের সংকটে পড়েছে ইসরায়েল।
এতে করে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েল ইরান ও হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেট কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিরোধে ‘ইন্টারসেপ্টর’ (আকাশ হামলা প্রতিরোধী ব্যবস্থা) অস্ত্রের সংকটে পড়েছে। এতে করে ইসরায়েলের আকাশসীমা অনেকটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। সে কারণে হিজবুল্লাহর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরোধী ব্যবস্থা ‘এয়ার ডোম’ দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, এ সমস্যা মোকাবিলায় ইসরায়েলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ওয়াশিংটন। তবে এজন্য ইসরায়েলকে আগে ঠিক করতে হবে কোন ধরনের হামলার অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ডানা স্ট্রেউল বলেছেন, ইসরায়েল বর্তমানে ভীষণভাবে আকাশ প্রতিরোধী অস্ত্রের সংকটে পড়েছে। এখন যদি ইরান ও হিজবুল্লাহ একসঙ্গে ইসরায়েলে রকেট কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে, তাহলে দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এক জটিল অবস্থার মধ্যে পড়বে।
এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ প্রধান নির্বাহী (সিইও) বোয়াজ লেভি বলেন, এ সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের কর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তারা সপ্তাহের ৭ দিনই কাজ করে চলেছেন। যত সমস্যাই থাক, আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতেই হবে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করা হবে না।
যদিও ইসরায়েল বার বার বলে আসছিল যে, তাদের সৈন্যদের চলাচলের পথ থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রধানের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান জ্যাঁ-পিয়েরেঁ ল্যাখোঁ নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তত্ত্বাবধানে এবং এ কমিটির সদস্যভুক্ত সদস্যগুলোর সেনাদের সহায়তায় ইউনাইটেড ন্যাশনস ইনটেরিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউএনআইএফএল) দক্ষিণ লেবাননে অবস্থান করবে এবং সেখানে অবস্থান করেই শান্তিরক্ষার মিশনের কাজ করে যাবে।
এর আগে রোববার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে সতর্ক করে বলেছিলেন, দক্ষিণ লেবাননের বেস থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সদস্যরা সেখানকার মানুষদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইসরায়েলের ওপর হামলা করে আসছে। এছাড়া হিজবুল্লাহর সদস্যদের সেখান থেকে নির্বৃত্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ।
জ্যাঁ-পিয়েরেঁ ল্যাখোঁ বলেন, দক্ষিণ লেবাননে নীল হেলমেট পরিহিতরা সেখানে অবস্থান করেবন এবং স্থায়ী কমিটির দেওয়া দায়িত্ব পালন করতে তারা বাধ্য। সেখানে থেকে তারা স্থানীয় নাগরিকদের সহযোগিতা করবে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ অভিযোগ করে বলেছেন যে, দক্ষিণ লেবাননে শান্তিরক্ষা মিশনকে লক্ষ করে কোনো হামলা করেনি ইসরায়েল।
তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। শুধু বার বার সেখানে অবস্থানরত শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের এক পুলিশ লাইনসে দুর্বৃত্তরা হামলা করলে ৪ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
জানা যায়, ৫ দুর্বৃত্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে বান্নু পুলিশ লাইনসের সদর ফটকে সামনে থেকে গুলি ও গ্রেনেড ছোড়ে ও গুলিবর্ষণ করতে থাকে। সেসময় সদর ফটকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের লক্ষ করে পাল্টা গুলি ছুড়লে তারা পুলিশ লাইনসের গেস্ট হাউসে আশ্রয় নেয়।
এরপর সেখান থেকে ৬ ঘণ্টা ধরে পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময় করে। তাদের গুলিতে পুলিশের ৪ সদস্য নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, সোমবার খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের বান্নুর ইকবাল শহীদ পুলিশ লাইনসে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক হেড পুলিশ কনস্টেবল নিহত হওয়ার পর সেখানে তার জানাজা পড়ানো হয়।
এর দুই ঘণ্টা পর রিকশা মোটরসাইকেলে করে ৫ দুর্বৃত্ত গ্রেনেড ও অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সদর ফটকের সামনে থেকে গ্রেনেড ছোড়ে ও গুলি করতে থাকে।
এরপর সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের লক্ষ করে পাল্টা গুলি ছুড়লে তারা পুলিশ লাইনসের গেস্ট হাউসের ভেতরে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে তারা গুলি চালাতে শুরু করলে আরো অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাদের ওপর পাল্টা হামলা চালাতে শুরু করে। ৬ ঘণ্টা ধরে গুলি বিনিময় চলে। এ সময় ৪ পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বান্নু জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন আহমেদ পুলিশ লাইনসে উপস্থিত হয়ে বলেন, নিহত পুলিশ সদস্যদের সাহসী প্রতিরোধের কারণে পুলিশ লাইনস আরো হতাহতের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন হামলার বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন বলে দ্য ডন জানায়।