মৃতদেহ উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছে লিবিয়া
লিবিয়ায় চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ শহর দেরনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩০০ জনে। উদ্ধারকারী দলগুলো বন্যার পানিতে সাগরে ভেসে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে।
রোববার ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল আঘাত হানলে দেরনায় দুটি বাঁধ এবং চারটি সেতু ভেঙে শহরের বেশিরভাগ অংশ পানিতে ডুবে যায়। রেড ক্রিসেন্টের মতে এ ঘটনায় প্রায় ১০ হাজার লোক নিখোঁজ রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের হিশাম চকিউয়াত বলেছেন, বন্যার ভয়াবহতা দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম, এটি একটি সুনামির মতো। দেরনার দক্ষিণে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে শহরের বড় অংশ সমুদ্রে টেনে নিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, রোববারের ঝড়ের প্রভাবে সোসা, আল-মারজ ও মিসরাতা শহরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, দানিয়েলের আঘাতে একটি বিশাল এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে। বসবাসকারীদের সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বন্যা দানিয়েল। যারা বেঁচে আছেন, তারা বাসার ছাদে আটকা পড়েছেন।
বায়দা শহরের ত্রাণকর্মী কাসিম আল-কাতানি বিবিসিকে বলেছেন, উদ্ধারকারীদের জন্য দেরনায় পৌঁছানো কঠিন ছিল, কারণ শহরের বেশিরভাগ প্রধান সড়ক বন্যার পানিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো।
জল প্রকৌশল বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে বলেছেন, সম্ভবত শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার (আট মাইল) দূরে অবস্থিত উপরের বাঁধটি প্রথমে পানি আটকে রাখতে ব্যর্থ হয়। পানির প্রবাহ নদী উপত্যকা থেকে দ্বিতীয় বাঁধের দিকে পাঠানো হলে দেরনার আশেপাশের এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে যায়।
উদ্ধারকর্মী কাসিম আল-কাতানি বলেন, দেরনায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে এবং চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব রয়েছে। দেরনার একমাত্র হাসপাতালটি আর রোগী ধারণ করতে পারছে না। এদিকে হাসপাতালটিতে এখনও সাতশ’র বেশি মরদেহ রয়েছে বলে জানান তিনি।
চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে মিশরসহ আরও কিছু দেশ। কিন্তু লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, লিবিয়া দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ায় দেশটির রাজনৈতিক অবনতি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইরান, ইতালি, কাতার ও তুরস্কসহ বেশকিছু দেশ ত্রাণ সাহায্য পাঠিয়েছে বা পাঠাতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।