কিম-পুতিন সাক্ষাতের বিষয়ে ‘কিছু বলার নেই’ ক্রেমলিনের

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কিম জং-উন ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

কিম জং-উন ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছেন বলে নিউইয়র্ক টাইমসে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সে সম্পর্কে ‘কিছু বলার নেই’ বলে মন্তব্য করেছে ক্রেমলিন।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার সূত্রে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল যে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার চিন্তা করছেন।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র বিক্রি নিয়ে চলমান আলোচনার অংশ হবে।

ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অফ কোরিয়া (ডিপিআরকে) বা উত্তর কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করে ওয়াটসন বলেছিলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে সতর্ক করা সত্ত্বেও রাশিয়া এবং ডিপিআরকের মধ্যে অস্ত্র আলোচনা সক্রিয়ভাবে অগ্রসর হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে, কিম জং উন এই আলোচনাগুলো অব্যাহত রাখতে চান।’

গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস বলেছিল যে, রাশিয়া ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে মস্কোর যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র এবং সরবরাহের জন্য উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে গোপনে সক্রিয় আলোচনা করছে।

এদিকে, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) আলোচনার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, শিগগিরই শস্যচুক্তি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।

২০২২ সাল থেকে পুতিনের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাতের পর এরদোয়ান সোচির ব্ল্যাক সি রিসোর্টে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, আমরা এমন একটি সমাধানে পৌঁছাব যা অল্প সময়ের মধ্যে প্রত্যাশা পূরণ করবে।’

এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়ার প্রত্যাশা সকলের কাছে সুপরিচিত এবং ত্রুটিগুলো দূর করা উচিত।

অন্যদিকে পুতিন বলেছেন, রাশিয়া শস্যচুক্তিতে ফিরে আসতে পারে, যদি পশ্চিমারা রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির সুবিধার্থে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মত একটি পৃথক স্মারকলিপি পূরণ করে।

এরদোয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা রাশিয়ার কৃষি রপ্তানিকে বৈশ্বিক বাজারে পৌঁছানো থেকে সীমাবদ্ধ করা বন্ধ করলেই রাশিয়া শস্যচুক্তিতে ফিরে আসতে পারে।

পুতিন বলেন, ‘আমরা শস্যচুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা বিবেচনা করার জন্য প্রস্তুত থাকব এবং আমি আজ আবার এরদোয়ানকে এ বিষয়ে বলেছি যে, রাশিয়ার কৃষি পণ্য রপ্তানির উপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটি করব।’

তিনি বলেন, পশ্চিমা যে দাবি করেছে যে, রাশিয়া শস্যচুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করে খাদ্য সংকট তৈরি করেছে তা ভুল। কারণ, মস্কো ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে দাম বাড়েনি। পুতিন বলেন, গুদামে খাদ্যের কোনও অভাব নেই।

এর আগে, এরদোগানের প্রধান পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা আকিফ কাগাতে কিলিক হ্যাবার টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা মস্কোকে শস্যচুক্তিতে ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছি। শস্যচুক্তির বর্তমান অবস্থা নিয়ে সোমবার শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা করা হবে। আমরা সতর্ক, কিন্তু আমরা সাফল্য অর্জনের আশা করছি।’

এই চুক্তির লক্ষ্য ছিল ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে শস্য পাঠানো এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সঙ্কট কমানো।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার বলেছেন, তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।

এরদোগানের বৈঠকের বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছিল, শস্যচুক্তিতে ফেরানোর ক্ষেত্রে রাশিয়াকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত অক্টোবরের পর পুতিন এবং এরদোয়ানের মধ্যে এটি প্রথম ব্যক্তিগত বৈঠক।

এদিকে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের প্রধান শস্য রপ্তানিকারক বন্দরের একটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে।