নাইজারের সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে বৈঠকে ইকোওয়াস
পশ্চিম আফ্রিকার সামরিক প্রধানরা নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ঘানায় দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বসেছেন। গত ২৬শে জুলাই মোহাম্মদ বাজুমকে অপসারণের পর দেশটিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
দ্য ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) একদিন আগে নাইজারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার শেষ অবলম্বন হিসাবে সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপে সম্মত হয়েছিল।
অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গে অব্যাহত আলোচনা ব্যর্থ হলে বাজুমকে মুক্ত করতে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিস্তারিত ঠিক করতে ইকোওয়াস প্রতিরক্ষা প্রধানরা ঘানার রাজধানী আক্রাতে দুই দিনের বৈঠক করছেন।
ইকোওয়াসের রাজনৈতিক বিষয়ক কমিশনার আবদেল-ফাতাউ মুসাহ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) জানান, ‘এ বিষয়ে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে, অন্য সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পশ্চিম আফ্রিকার সামরিক বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে সাড়া দিতে প্রস্তুত। আমরা এখনও কূটনীতিকে সর্বোচ্চ দিচ্ছি এবং বল এখন জান্তার কোর্টে।’
মুসাহ আরও বলেন, কেপ ভার্দে এবং সামরিক সরকারগুলোর নেতৃত্বাধীন দেশগুলো ছাড়া ১৫ সদস্যের ব্লকের অন্যান্য সমস্ত দেশ আঞ্চলিক শক্তিতে অবদান রাখতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রতিরক্ষা প্রধানরা ঘানার স্থানীয় সময বিকাল ৪টায় বৈঠকের সমাপনী অনুষ্ঠানে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকে বাজুমকে তার পরিবারের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে আটক রাখা হয়েছে। তাই বাজুম এবং তার পরিবার আটক অবস্থায় কেমন আছেন সেই বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে।
ইকোওয়াস নেতারা বলেছেন, ২০২০ সাল থেকে মালি, বুরকিনা ফাসো এবং গিনির পরে পশ্চিম আফ্রিকার চতুর্থ দেশ হিসাবে অভ্যুত্থানের শিকার হয়েছে নাইজার। অভ্যুত্থানের ওই ধারাবহিকতা বন্ধ তাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাহেল অঞ্চলটি আল-কায়েদা এবং আইএসআইএলের (আইএসআইএস) সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে এবং ওই সহিংসতার কারণে তৈরি হওয়া হতাশা আংশিকভাবে সামরিক অভ্যুত্থানকে প্ররোচিত করছে।
ইকোওয়াস সেনারা ১৯৯০ সাল থেকে লাইবেরিয়া এবং সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধসহ অন্যান্য জরুরী পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে। আইভরি কোস্ট, বেনিন এবং নাইজেরিয়ার সেনারা নাইজার মিশনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নাইজারের অভ্যুত্থান নেতারা যেকোনও সামরিক হামলার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন এবং বাজুমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার হুমকি দিয়েছেন। তবে তারা এটাও বলেছে যে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
প্রতিবেশী মালি এবং বুরকিনা ফাসোর সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারগুলোও বলেছে, নাইজারে হস্তক্ষেপকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা হিসাবে দেখা হবে।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র নাইজার সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। ইকোওয়াস ইতিমধ্যে নাইজারের উপর বাণিজ্য ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে এবং ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে সাহায্য কর্মসূচি স্থগিত করেছে।