নয়টি ভ্যাকসিন নিয়ে করোনা যুদ্ধের প্রস্তুতি ভারতের

  • কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: ভারতে করোনায় মৃতদের গণশেষকৃত্যের জ্বলন্ত চিতা

ছবি: ভারতে করোনায় মৃতদের গণশেষকৃত্যের জ্বলন্ত চিতা

নিজেদের দুই ভ্যাকসিনের পাশাপাশি পয়লা মে রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ আসছে ভারতের হাতে। অর্থাৎ প্রলয়ঙ্করী করোনা তাণ্ডবে ভারতের নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিনের সংখ্যা হবে তিন। একইসঙ্গে জাইডাস ক্যাডিলা এবং বায়োলজিক্যাল-ই সংস্থার আরও দুটি ভারতীয় ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরুর সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, অচিরেই পাঁচ কোম্পানির ভ্যাকসিন নিয়ে করোনা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত ভারত হাতে রেখেছে আরও এক ভ্যাকসিনসহ মোট ছয় ভ্যাকসিন। তদুপরি, কথা চলছে আরও তিন কোম্পানির সঙ্গেও। মোদ্দা কথায়, নয়টি ভ্যাকসিন নিয়ে ভয়ঙ্কর করোনা বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।

বিশ্বে করোনা সংক্রমণ এবং মানবিক ক্ষয়-ক্ষতির বিবেচনায় ভারতের পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করার নাজুক ঘটনাকে বিশ্বমিডিয়ায় হিউম্যান ক্যাটাসস্টপি বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। করোনায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুতে গণশেষকৃত্যের জ্বলন্ত চিতার ছবি ভাসছে আন্তর্জাতিক নিউজ ফিডে। মুম্বাই, পুণা, দিল্লির মতো কিছু অতি সংক্রামিত শহরকে ঘিরে মৃত্যুর মিছিল আর অক্সিজেনের জন্য চরম হাহাকার বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

করোনার ভারতীয় ধরনের তীব্র ক্ষমতার প্রেক্ষাপটে সরকারের আগাম প্রস্তুতিহীনতা এবং রাজনৈতিক-ধর্মীয় সমাবেশে লাগামছাড়া স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ অকাতরে মৃত্যু ও আক্রান্তের মাধ্যমে। বিশেষজ্ঞরা সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করায় ভারত করোনা ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ করে নিজের দেশের চাহিদা মিটানোর দিকে মনোযোগী হয়েছে।

এমতাবস্থায়, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট আমেরিকার নোভাক্স সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আরও একটি ভ্যাকসিন নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেছে। সেক্ষেত্রে এই বছরেই ছয়টি ভ্যাকসিন ভারতে নিশ্চিতভাবে কাজ করতে শুরু করবে।

অন্যদিকে আমেরিকার ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসন নিয়েও ভারতের বিশেষজ্ঞ কমিটি শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে। সব ঠিক থাকলে ভারতের কব্জায় নয়টি ভ্যাকসিন চলে আসবে চলতি বছরেই।

ভারতের প্রায় সকল প্রশাসনের নজর এখন পয়লা মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ১৮ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকদের টিকাকরণের কাজকে সফলভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে। এজন্য কোথাও কোথাও অতি সংক্রমণের নিরিখে স্থানীয় কার্ফুর মাধ্যমে গণ-টিকাকরণের গতি ও পরিধি বাড়ানোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

উপরন্তু, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১৫ কোটি ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে। আগামী তিনদিনে আরও ৮০ লক্ষ ডোজ পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র। বিলম্বে হলেও সার্বিক টিকাকরণের মাধ্যমে করোনার ভয়াল পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট মৃত্যপুরী থেকে বেরিয়ে আসতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে ভারত।